ক্যাম্পাস

ভালো থেকো স্বপ্নের নায়ক

জিএম আদল: বাংলা চলচ্চিত্র জগতে সালমান শাহ এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। লাখ কোটি দর্শকের অন্তরে একটি ভালোবাসার নাম সালমান শাহ। আজ ৬ সেপ্টেম্বর সেই স্বপ্নের নায়কের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। স্বপ্নের নায়ককে আমরা অকালে হারিয়ে ফেলেছি। তিনি ছিলেন, তিনি আছেন এবং ভক্তদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বেঁচে থাকবেন চিরকাল|

সালমান শাহর জন্ম ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেট নগরীর দাড়িয়াপাড়ায়। বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। মা নীলা চৌধুরী করতেন রাজনীতি।

সালমান পড়াশোনা করেন খুলনার বয়রা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে। ১৯৮৭ সালে তিনি ঢাকার ধানমণ্ডি আরব মিশন স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। পরে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি ও ধানমণ্ডির ড. মালেকা সায়েন্স কলেজ থেকে বি.কম পাস করেন। ১২ আগস্ট ১৯৯২ সালে তিনি সামিরা হককে বিয়ে করেন।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। তবে তার মৃত্যু সম্পর্কে এখনো কোনো কুলকিনারা পাওয়া যায়নি।

আমি ছোট বেলা থেকে কিছুটা সিনেমা পাগল ছিলাম। সালমান শাহ এর অভিনীত আমার দেখা প্রথম সিনেমাটি ছিল সত্যের মৃত্যু নেই। হলে গিয়ে বড় পর্দায় সিনেমাটি দেখার সুযোগ হয়েছিল আমার। সিনেমার একটি করুণ গান ছিল ‘চিঠি এলো জেল খানাতে অনেক দিনের পর’। গানটি দেখে সারাদিন প্রচুর কেঁদেছিলাম। এখনো সে স্মৃতি ভুলিনি।

তখন সিনেমাগুলো ছিল পারিবারিক বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। পারিবারিকভাবে উৎসব করে সিনেমা দেখতে হলে যেত পরিবারগুলো । ঈদের সময় নতুন সিনেমার জন্য অপেক্ষা করাই ছিল আমাদের আরেক উৎসব। ওই সময়ে বিটিভি ছাড়া আমাদের গ্রামগুলোতে আর কোনো বিনোদন মাধ্যম ছিল না। শুক্রবার বিকাল ৩ টায় বিটিভি তখন বাংলা সিনেমা দেখাত। মনে আছে, কোনো এক ঈদে ঈদের নামাজ পরেই ৩ টা পর্যন্ত টিভির সামনে বসে ছিলাম কেয়ামত থেকে কেয়ামত দেখবো বলে। এমন অনেক সুখ দুঃখের স্মৃতি আছে সালমান শাহের কোটি ভক্তের মাঝে। সালমান শাহের যেদিন মৃত্যু হয়েছিল কয়েকজন তরুণী সেদিন প্রাণ দিয়েছিল,কান্নার রোল উঠেছিল প্রতিটি ঘরে ঘরে। সেই শিশু বয়সে আমিও কেঁদেছিলাম।

বাংলা সিনেমার রাজপুত্রের আজ প্রয়াণ দিবস। অনেক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা। ওপারে ভালো থাকবেন প্রিয় সালমান শাহ।

আমরা ভালো আছি, তুমিও ভালো থেকো প্রিয় মানুষ।

লেখক: শিক্ষানবিশ আইনজীবী, ঢাকা জজ কোর্ট ও শিক্ষার্থী, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯/জিএম আদল/হাকিম মাহি