ক্যাম্পাস

চালিতাবুনিয়া : সাগরের সাথে যার মিতালি

চারদিকে নদী বেষ্টিত একটা দ্বীপ চালিতাবুনিয়া। এটি পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজিলার একটি দ্বীপ ইউনিয়ন। জায়গাটি অনেকের কাছে জেলে পাড়া হিসেবে পরিচিত। চালিতাবুনিয়া ১৯৯০ সালে ইউনিয়নে রূপান্তরিত হয়। প্রথম দিকে ইউনিয়নটি আকারে বড় থাকলেও, পরে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ছোট হয়ে যায়।

চালিতাবুনিয়ায় বর্তমানে প্রায় ৯/১০ হাজার মানুষ বসবাস করছেন। এখানে  নেই কোন উন্নত মানের হাসপাতাল। কেউ যদি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন, তখন চিকিৎসা নেয়ার জন্য যেতে হয় গলাচিপা উপজেলায়। যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ট্রলার।গলাচিপা শহরে আসতে প্রথমে নৌকাযোগে যেতে হয় পানপট্রি, সেখান থেকে গাড়িযোগে আসতে হয়। আর যদি আবহাওয়া খারাপ থাকে, তখন আর ট্রলার বা নৌকা নিয়ে যাওয়া যায় না। ঝড়-তুফান হলে এই নদী খুবই ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। যাওয়ার আর কোন বিকল্প পথ থাকে না। প্রকৃতির কাছে এখানকার মানুষগুলো খুবই অসহায়।

এখানে প্রতিনিয়ত বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনে থাকে। ঘূর্ণিঝড় হলে এখানে নেই কোন উন্নতমানের সাইক্লোন শেল্টার কেন্দ্র, নেই কোন বেড়িবাঁধ। ফলে মানুষ, পশুপাখিসহ ব্যাপক জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে।

এই চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নটির পূর্ব দিকে রয়েছে পায়রা সমুদ্র বন্দর। এখান থেকে ট্রলার যোগে পায়রা বন্দর যেতে প্রায় ৪০ মিনিট সময়ের প্রয়োজন হয় । ইউনিয়নটির দক্ষিণে রয়েছে বিশাল বঙ্গোপসাগর। পশ্চিমে রয়েছে চর-কারফারমা ও আগুনমুখা নদী। পূর্ব দিকের ডিগ্রি নদীর পরেই রাঙ্গাবালী উপজেলা। ইউনিয়নটিতে একটি সিনিয়র মাদ্রাসা, একটি হাইস্কুল, পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। আরো রয়েছে, একটি মিনি হাসপাতাল, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, একটি বড় বাজার, পাঁচটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র। এর ভেতর একটি আশ্রয় কেন্দ্র নদীর গর্ভে চলে গেছে। নামাজের জন‌্য পঁচিশটি মসজিদ রয়েছে।

কয়েকজন গুণীজনেরও জন্ম হয়েছে এখানে। তাঁদের মধ‌্যে পটুয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম অন‌্যতম।

চালিতাবুনিয়া ভ্রমণ প্রেমী মানুষের জন‌্য একটি নয়নাভিরাম জায়গার নাম। এখান থেকে পায়রা সমুদ্র বন্দর ও বিশাল সাগরের উঁচু উঁচু ঢেউ দেখা যায়।

লেখক: শিক্ষার্থী, গলাচিপা সরকারি কলেজ, পটুয়াখালী। পটুয়াখালী/ওমর সানি/হাকিম মাহি