ক্যাম্পাস

শিক্ষক আমাদের পথপ্রদর্শক

প্রত্যেক শিক্ষকই প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর কাছে সম্মানের। শিক্ষকের সামান্য প্রেরণায় একজন শিক্ষার্থী অনেক দূর পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারেন। গড়ে তুলতে পারেন নিজের জীবন। আলোকিত করতে পারেন জাতিকে। তাঁরা আমাদের সঠিক পথপ্রদর্শক।

একজন সফল মানুষের পেছনে শিক্ষকের যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে, তা নতুন করে বলার কিছু নেই। সেই শিক্ষক যে পড়াশোনার ক্ষেত্রেই হতে হবে, তা নয়। তিনি থাকতে পারেন জীবনের যে কোনো ক্ষেত্রেই। তিনি যে পড়ুয়াকে শেখাবেন, তাই নয়। তিনি তাকে জীবনে চলার পথে পরামর্শ দেবেন, ব্যর্থতায় পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দেবেন, সাফল্যের দিনে নতুন লক্ষ্য স্থির করে দেবেন। তিনি তাকে শুধু সফল নয়, একজন ভালো মানুষ হতে শেখাবেন।

প্রাইমারি থেকে ভার্সিটি পর্যন্ত প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর জীবনে অসংখ্য শিক্ষকের সাথে দেখা হয়। কিছু শিক্ষকের সাথে কাটানো স্মৃতি এখনো তাদের অনেকের মনে পীড়া দেয়। যা কখনো ভুলবার নয়। এসব স্মৃতি নিয়েই একজন ছাত্রের কাছে অনেকে হয়ে ওঠেন প্রিয় শিক্ষক। সবার যেমন প্রিয় শিক্ষক আছেন, আমারও একজন প্রিয় শিক্ষক আছেন। নাম মিসেস ফাল্গুনি আক্তার।

আমি জীবনে এখনো তেমন কিছু করতে পারিনি। কারণ, তিন বছর আগে মাত্র মাধ্যমিক শেষ করেছি। কিন্তু আমি যখন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়তাম তখন একজন শিক্ষিকা ছিলেন, আমি বলবো তার কারণেই আমার মাধ্যমিকটা ভালো কেটেছে।

তিনি আমাকে অন্যদের চেয়ে একটু আলাদা করে দেখতেন, এটা আমার মনে হত। মনে হত, আমি একটু ভালোভাবে পড়াশোনা করলে তিনি খুব খুশি হতেন। জানিনা আমার এই ভাবনাটা তিনি কখনো লক্ষ করেছেন কি না, কিন্তু আমার মনে হত তিনি সবসময় আমার যেন খেয়াল রাখছেন। তিনি আমাকে কতটুকু ভালোবাসতেন জানিনা, তবে আমি ভাবতাম আমি একটু ভালো লেখাপড়া করলে তিনি খুশি হবেন। তাই তাঁকে দেখানোর জন্য আমি ভালোভাবে লেখাপড়া করতাম। আর এ কারণেই হয়তো আমার মাধ্যমিকটা ভালো কেটেছে।

তবে আমার জীবনে যে সকল শিক্ষকের আদর্শ ও শিক্ষা খুব গভীরভাবে ছাপ ফেলেছে, তাদের মাঝে অন্যতম ফাল্গুনি ম্যাম। তিনি জাবরহাট হেমচন্দ্র হাই স্কুলে ইংরেজি বিষয় পড়ান।

ম্যাম ছাত্রদেরকে খুব সহজভাবে বোঝাতে পারেন –যা একজন আদর্শ শিক্ষকের অন্যতম গুণাবলি। ইংরেজির মতো কঠিন বিষয়, যা অনেকের কাছেই আতঙ্কের। এমন একটি বিষয় ম্যাম আমাদেরকে এত উৎসাহ এবং দক্ষতা নিয়ে পড়িয়েছেন, যে তার সকল ছাত্রই তাকে সারা জীবন মনে রাখবেন । একজন আদর্শ শিক্ষকের যাবতীয় গুণাবলি তার মধ্যে ছিল বিদ্যমান।

বিভিন্ন দিক বিচার করে আমি শুধু তাঁকেই আমার প্রিয় শিক্ষক বলে স্বীকার করেছি। এমন একজন আদর্শ শিক্ষককে আমার প্রিয় শিক্ষকরূপে বর্ণনা করতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত। করুণাময়ের কাছে আমি ম্যামের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।

লেখক: শিক্ষার্থী, পীরগঞ্জ সরকারি কলেজ, ঠাকুরগাঁও। পীরগঞ্জ/নাসিরুল ইসলাম/হাকিম মাহি