ক্যাম্পাস

সান্ধ্য আইন, ভোগান্তিতে নোবিপ্রবির ছাত্রীরা

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) আবাসিক ছাত্রী হলের ছাত্রীদের সন্ধ্যা ৭টার মধ্যেই হলে ফিরতে হয়। এটি শিক্ষার্থীদের কাছে ‘সান্ধ্য আইন’ নামে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের হযরত বিবি খাদিজা হলে এ আইনের কঠোরতা একটু বেশি।

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হলে না ফিরতে পারলে জনপ্রতি ১০০ টাকা করে জরিমানা নেয়া হয় ও তাদের অভিভাবককে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে জানানো হয়। এই আইনের জালে বন্দি হলের ছাত্রীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যদি কোনো ছাত্রী কোনো কারণে হলে ফিরতে দেরি করেন, তাহলে হলের গেটে থাকা খাতায় তাকে নাম ও রুম নম্বর লিখে আসতে হয়। যাতে হল কর্তৃপক্ষ পরে দেরি হওয়ার কারণ জানতে চেয়ে ওই ছাত্রীকে জেরা করতে পারেন। এদের মধ্যে যারা সন্ধ্যার পর টিউশনে যান তাদেরও নিয়মিত ভোগান্তি পোহাতে হয়।

হল সূত্রে জানা যায়, কোনো শিক্ষার্থী টিউশন করে ফিরতে দেরি করলে হল প্রাধ্যক্ষ তাদের ধমক দেন এবং টিউশন করতে নিষেধ করেন। আবাসিক ছাত্রীদের প্রাধ্যক্ষ বলেন, হলে থাকলে কেন টিউশন করতে হবে? এসব কথা বলে হলের ছাত্রীদের টিউশনের বিরুদ্ধাচরণ করেন প্রাধ্যক্ষ।

এছাড়াও তিনি নোটিশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বারবিকিউসহ বিভিন্ন পার্টিতে যাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এতে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে রয়েছেন। তবে গুটিকয়েক শিক্ষার্থীর জন্য এই নিয়মগুলো নোটিশেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। ফলে প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনিয়ম করেই হলে ঢুকছেন এসব শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সান্ধ্য আইনের কারণে তারা সন্ধ্যার আগেই হলে ফিরে আসেন। কোনো কারণে যদি এক দিন ৭টার পরে হলে ফেরেন, তাহলে তাদের নানা রকম কৈফিয়ৎ দিতে হয়। রেকর্ড জমা দিতে হয়। কর্তৃপক্ষের লোকজন বাড়িতে ফোন দিয়ে দেরি করে ফেরার কথা বলে দেবে বলেও অনেক সময় হুমকি দেয়। 

এছাড়াও তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পার্শ্ববর্তী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রীদের রাত ৮টা পর্যন্ত হলের বাইরে থাকার অনুমতি থাকলেও আমাদের ক্ষেত্রে সেই সুযোগ নেই। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই ধরনের আইন চলতে পারে না।

বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রাধ্যক্ষ ড. আতিকুর রহমান বলেন, ‘দৈনন্দিন হলে ঢোকার শেষ সময়টি বেধে দেয়া অনেক আগে থেকেই। তবে শিক্ষার্থীদের কোনো যৌক্তিক দাবি থাকলে আমরা হল প্রশাসন তা বিবেচনা করব।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, ‘দুই হলে দুই ধরনের নিয়ম চলছে, সেটা আমার এতদিন জানা ছিল না। তবে বিষয়টা যেহেতু এখন নজরে এসেছে, এই বিষয়ে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে জরিমানা আদায়ের বিষয়ে আমার জানা নেই।’ নোবিপ্রবি/মাহি