ক্যাম্পাস

তাঁদের ফুলবাড়িয়া পরিবার

‘পরিবার’ কথাটি শুনলেই বুঝি রক্তের বন্ধন। কিন্তু কিছু-কিছু সম্পর্ক রক্তের বন্ধনকেও ছাপিয়ে যায় আত্মার বন্ধনে। যেন মনের অগোচরেই একে অপরের আপন হয়ে যায় এক মুহূর্তেই।

ছোটবেলা থেকেই মা-বাবার সানিধ্যে বড় হয়ে ওঠা দুরন্ত ছেলে-মেয়েরা আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। স্কুল, কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে পরিবারের মায়া থেকে বেরিয়ে মিশতে হয় ভিন্ন পরিবেশে। চেনা পরিবেশটাকে ফেলে যখন বিশ্ববিদ্যালয় নামক প্ল্যাটর্ফমে পা রাখা হয়, তখন চারপাশটা কেমন যেন নিসঙ্গতায় চেপে বসে। মনে একটু  প্রশান্তি পেতে মরিয়া হয়ে ছুটে দিগ্বিদিক। যখনই দেখা মেলে নিজ ক্যাম্পাসে পড়ুয়া পরিচিত মুখদের, তখনই আনমনেই হেসে ওঠে প্রাণ।

সেই হাসির ও প্রশান্তির পেছনের গল্পটির বর্ণনায় ওঠে আসে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়া ‘ফুলবাড়িয়া পরিবারের’ কথা।

‘ভ্রাতৃত্বের বন্ধন, টিকে থাকুক আজীবন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চলতি বছরের শুরুতেই ‘ফুলবাড়িয়া পরিবার’ এর যাত্রা। সুখে কিংবা দুঃখে যেন স্বপ্ন সারথির মতো ছাঁয়া হয়ে থাকা স্বপ্নবাজদের পরিবার। সু-সময়ে যেমন থাকে মমতার বন্ধন। অসময়েও কাছে আসে পরিবার সর্বপ্রথম।

নতুন বছরের নতুন উদ্যমে ক্যাম্পাসে সিনিয়র ও জুনিয়রদের মাঝে যোগাযোগ ও সম্পর্কের মাত্রাকে আরো সুদৃঢ় করতে (৬ মার্চ) শুক্রবার সদ্য ভর্তি হওয়া নবীনদের বরণ ও বার্ষিক বনভোজনের আয়োজন করেছিল এ পরিবার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নামে খ্যাত ‘নারিকেলবাড়িয়ায়’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

দিনের শুরুতেই ক্যাম্পাস থেকে পরিবারের সদস্যরা গাড়িতে করে নারিকেলবাড়িয়া ক্যাম্পাসে পৌঁছে। শুরু হয় মজার একটি দিন। কেউ রান্না নিয়ে ব্যস্ত, আবার কেউ হাসি আড্ডায়। কেউ বা খেলছে ক্রিকেট। দেখে মনে হয়েছিল, সবাই যেন একই পরিবারের সদস্য।

দুপুরে খাওয়া শেষে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন খেলাধুলার। তার মধ্যে বালিশ খেলা, হাঁড়ি ভাঙা খেলা, ঝুড়িতে বল নিক্ষেপ ছিল উপভোগ করার মতো। সবাই অংশ নেয় এইসব ইভেন্টে। দিনশেষে সাংস্কৃতিক পর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় স্মৃতিময় দিনটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সবুজ-শ্যামল সমারোহে এমন আয়োজন সকলকে আনন্দিত করে তুলেছিল। এই আনন্দকে কখনো লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করা যাবে না। ঠিক তেমনি সকলেই কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে সুন্দর মানুষ হয়ে উঠবে এই অঙ্গীকার নিয়েই এগিয়ে যাবে ফুলবাড়িয়া পরিবারের স্বপ্নগুলো। দিনশেষে পরিবারটি সকলকে মায়ার বাঁধনে আগলে রাখবে এমন গল্পটাই কাম্য।

লেখক: শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। রাবি/হাকিম মাহি