ক্যাম্পাস

কেমন আছে প্রিয় ক্যাম্পাস?

এইতো সেদিন ক্যাম্পাসের চায়ের দোকানের টুংটুাং শব্দে আলোড়িত হতো চারদিক। সকাল ৮টার বাস আসার পর থেকে কত শত বন্ধুরা চক্রবাক ক্যাফেটেরিয়ার লাল চা খাওয়ার জন্য ভিড় করতো সেখানে।

ক্যাফেটেরিয়ায় সবচেয়ে পরিচিত মুখ রিয়াদ ছেলেটা। এদিক থেকে কেউ ডাকছে এই রিয়াদ খিচুড়ি নিয়ে আয়, কিংবা আরেক দিক থেকে রিয়াদ ভাই আমার পরোটা-ভাজি হলো ভাই?

মেয়েরা আবার দোলনচাঁপা হলে ভিড় জমাতো খিচুড়ি আর বেগুন ভাজার জন্য। দুপুরবেলা বন্ধুদের সঙ্গে সাওদার গরম গরম সিঙ্গারা আড্ডায় এক নতুন মাত্রা যোগ করতো। ক্লান্ত-শ্রান্ত শরীর নিয়ে সারাদিন ক্লাস অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে বাসে সিট রাখা, ঝুলে ঝুলে হাসাহাসি করে ৪০ মিনিটের রাস্তা শেষে বাসায় ফেরাটা ছিল সবচেয়ে আনন্দের, কেন জানি।

বলছি শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে এক নীরব পরিবেশে অবস্থিত ছোট্ট ক্যাম্পাস, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। কিন্তু কেমন আছে এখন আমার এই প্রাণের ক্যাম্পাস? না ভালো নেই এখন।

থমকে আছে জাককানইবি। এখন আর সন্ধ্যায় চাঁদের আলোতে দেখা যায় না, প্রেমিক যুগলকে হাত ধরে হাঁটতে। চিকনার মোড়ের মালাই চা আর পেঁয়াজু খেতে ভিড় লাগে না এখন। কিংবা ট্রাম্প পুলে বসে না বড় ভাইদের জমজমাট আড্ডা। লাইব্রেরি ফাঁকা পড়ে আছে, নেই প্রাণপ্রিয় ছাত্ররা। কারণ একটাই শুধু জাককানইবি নয়, সারা পৃথিবী এখন থমকে গেছে মহামারি আকারে ধারণ করা করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে। এই পরিস্থিতিতে ব্যাঘাত ঘটেছে সব জায়গায়, আমাদের বাংলাদেশেও এই ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে।

কিন্তু কতদিন এভাবে থমকে থাকবে প্রিয় ক্যাম্পাস, কবে আবার ভোরে উঠবো এই ভেবে যে, আজ ক্যাম্পাসে সারাদিন কাজ আছে, ফিরতে দেরি হবে। হয়তো বা আবার শিরোনামহীন ব্যান্ড আসবে সেন্ট্রাল ফিল্ড কাঁপাতে, ডিপার্টমেন্টের নবীনবরণে মুক্তমঞ্চ কাঁপিয়ে দিবে বন্ধুরা।

অপেক্ষায় বসে আছি আমি, অপেক্ষায় বসে আছে বন্ধুরা, কবে জেগে উঠবে আমার ক্যাম্পাস আবার। কবে আমারা খুনসুটিতে মেতে ঘুরে বেড়াবো পুরো ক্যাম্পাস। সুস্থ হয়ে উঠো পৃথিবী, তোমার সুস্থ হওয়ার অপেক্ষায় থমকে আছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।

লেখক: শিক্ষার্থী, স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।

 

জাককানইবি/আশিকুর/মাহি