ক্যাম্পাস

শিক্ষার্থীদের ভাবনায় শোক দিবস

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সর্বাধিনায়ক, অভিভাবক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারানোর দিনটিই মূলত শোক দিবস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেটে নিহত হন তিনি। এই দিবসটি তাই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। শোক দিবসকে ঘিরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাবনাগুলো তুলে ধরেছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভীর আহম্মেদ।

কানিজ ফাতেমা রুপা, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

১৫ আগস্ট মানেই বেদনাদায়ক স্মরণীয় একটি দিন। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর পরিবারবর্গ সমেত হত্যার মাধ্যমে ঘাতকরা নতুন ইতিহাসের জন্ম দেন। এই ইতিহাস বাঙালির লজ্জার ইতিহাস। এই ইতিহাস জাতির অভিভাবক হারানোর ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু ছিলেন সাধারণ জনতার আশা-ভরসার প্রতীক। বাংলাদেশের মুক্তিকামী সাধারণ মানুষের প্রাণের নেতা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঘাতকরা চেয়েছিল তার অস্তিত্ব মুছে দিতে। কিন্তু, তারা সেটা পারেনি। বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে যেমন ছিলেন তেমন হয়ে বেঁচে আছেন, থাকবেন।

মোহাম্মদ গালিব ইশরাক ইমরান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়   

শোক শব্দটি মূলত এসেছে কোনো অন্ধকার অধ্যায় থেকে, যা কেবল বিষাদ দ্বারা পূর্ণ। শোক কখনও হয় ক্ষুদ্র আবার কখনো বা বৃহৎ। এই শোকটা যখন কোনো উজ্জ্বল নক্ষত্রের জন্য হয়, তখন তা হয়ে পড়ে বিষাদময় কাল। এমনই এক শোক নিয়ে বলছি, যা বাঙালি জাতি ৪৫ বছর যাবত লালন করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও করে যাবে। 

১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে তাঁর নিজ বাসভবনে ঘাতকদের হাতে খুন হতে হয়। এটি শুধুমাত্র নিছক ব্যক্তি বিশেষের হত্যাকাণ্ড ছিল না। এটি ছিল জাতির অস্তিত্বের ওপর আঘাত। এর মাধ্যমে যে নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেই নীতি ও আদর্শকেই ঘাতকেরা হত্যা করতে চেয়েছিল। চাইলেও তারা পারেনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে মুছে ফেলতে। শোক দিবসের শোককে শক্তিতে পরিণত করে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণ করাই হোক বাঙালি জাতির মূল লক্ষ্য।

তাহসিন তাজমিন, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর শোষিত জাতিকে একটা স্বাধীন রাষ্ট্র আর টগবগে স্বপ্ন উপহার দেওয়া মানুষটির জন্য সাড়ে চার দশক পরেও আমরা শোকে কাতর। বঙ্গবন্ধুর চেতনা, শ্রদ্ধাবোধের সাথে নিজের জীবনবোধকে যুক্ত করে নিলে তা আরও ফলপ্রসূ হবে।

মেহেদী হাসান, গণ বিশ্ববিদ্যালয় 

শোকের মাস আগষ্ট। ৭৫ এর আগস্টে স্বাধীন দেশের স্বপ্নদ্রষ্টাকে স্বপরিবারে হত্যার পর জাতীয় জীবনে নেমে আসে শোকের ছায়া। বাঙালি জাতির জন্য এই শোক কখনো শেষ হওয়ার নয়। কেননা, বাঙালি জাতির পথ প্রদর্শক, রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর  পরিবারকে নির্মমভাবে হারাতে হয়েছে আমাদের। এই হত্যার মাধ্যমে বাঙালির অপূরণীয় ক্ষতি হয়। যে আদর্শ, লক্ষ্য ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রের চার মূলনীতি গড়ে উঠেছিল, তা ধ্বংস করা হয়েছে। 

স্বাধীন দেশে হঠাৎ হায়েনার আঘাত জাতির বুকে যে ক্ষত সৃষ্টি করেছে, তা কখনো পূরণ হবে না। তবুও তার অহর্নিশ শোকের নিরবচ্ছিন্ন বেদনাকে আঁকড়ে ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে অনেক দূর। তার দেখানো স্বপ্নে আরও বহুদূর এগিয়ে যাবো আমরা। বঙ্গবন্ধু চিরজীবন তার কৃতকর্মে এবং আদর্শে অমর থেকে যাবেন।

সাজিয়া আফরিন সুলতানা মিথিল, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি 

নেতা এবং পথ প্রদর্শক শব্দ দুটির মাঝের পার্থক্যটা আকাশ-পাতাল। কিন্তু, যদি এক ব্যক্তির মধ্যে দুটো জিনিসই থাকে, তাহলে তো বোঝায় যায় তিনি কত বড় মাপকাঠির মানুষ। এমনি একজন বাঙালি জাতির প্রাণের নেতা, জাতির পথ প্রদর্শক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশ কী, দেশপ্রেম কী এই চেতনাটাই জাগিয়েছিলেন এই মহান মানুষটি। আমাদের মাটি যে কেবল আমাদেরই, আর তা যেকোনো মূল্যেই আমাদের আদায় করে নিতে হবে তাও শিখিয়ে গেছেন তিনি। 

মো. মমিন সরকার, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

আগস্ট মাস শোকের মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নৃশংসভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। শত্রুরা বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে দিতে চাইলেও বঙ্গবন্ধু গেঁথে আছেন প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে। বঙ্গবন্ধু ভালোবাসা দিয়ে সবার মন জয় করে নিয়েছিলেন। তিনি অন্যায়ের সাথে আপোস করেননি। শুধু রাজনীতিতে নয়, মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন তিনি। 

আমাদের বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে হবে, জানাতে হবে। তরুণদের দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ করতে বঙ্গবন্ধুকে জানার বিকল্প নেই। শুধু নামে রাজনীতি নয়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে রাজনীতি করতে হবে। বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সবাইকে তা পূরণে এগিয়ে আসতে হবে।

হাফিজা আক্তার, উত্তরা ইউনিভার্সিটি 

জাতীয় শোক দিবস সাধারণ কোনো দিবস নয়। এটি জাতির জন্য বেদনাদায়ক এবং করুণ ইতিহাসের এক কালো দিন। স্বাধীন দেশের জঘন্যতম কিছু পিশাচ জনতার আদর্শের নেতা, বাঙালির স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে গোটা জাতিকে ঘৃণ্যতম কাজ উপহার দেয়। আমরা সবাই জানি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কতটা আত্মত্যাগী দেশপ্রেমী ব্যক্তি ছিলেন। এমন একজন মানুষকে এভাবে খুন করা হলো যেটা থেকে লজ্জ্বার আর কিছুই হতে পারে না। 

ঘাতকদের ঘৃণ্যতম কাজ ঘৃণ্যই থেকে গেলো আর মহান মানুষের কাজ মহানই রয়ে গেলো। এটাই হলো জাতীয় শোক দিবসের মূল উপজীব্য বিষয়।

 

গবি/অনিক/মাহি