ক্যাম্পাস

স্কুল নয়, যেন স্বর্গরাজ্য

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খড়ের ঘর, টিনের ঘর, বিল্ডিংয়ের যাইহোক, শিক্ষার উৎকৃষ্ট মান, সুন্দর পরিবেশ এবং ভালো ফলাফলই শেষ কথা। তবে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতারা যদি হন উদারমনা, শিক্ষানুরাগী, রুচিশীল এবং বিত্তবান, তাহলে চাইলেই তারা প্রতিষ্ঠানের ভবন শিল্পের ছোঁয়ায় দৃষ্টিনন্দন করতে পারেন। যেখানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের নয়নাভিরাম পরিবেশ ও স্থাপনায় মুগ্ধ হয়ে শিক্ষা গ্রহণে আরও বেশি আগ্রহী হতে পারে নিঃসন্দেহে।

আধুনিক স্থাপত্য শৈলী ও দৃষ্টি নন্দন নকশায় নির্মিত কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলায় পান্ডুঘর হাজী সামছুদ্দিন ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়। বাঙ্গরা বাজার থানার ওই স্কুলটিকে প্রথম দর্শনে যে কেউ ভাবতে পারেন এটি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। প্রতিদিন অনেকেই স্কুলটি দেখার জন্য ছুটে আসেন। ভবনের সামনে ও পেছনের অংশসহ চারপাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা ও ভবনটির সঙ্গে সেলফিবন্দি করেন নিজেদের।

পান্ডুঘর গ্রামের উত্তর পূর্ব পাড়ায় বিশাল জায়গা নিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন ব্যবসায়ী ও শিক্ষানুরাগী নাজিম উদ্দীন ভূঁইয়া ও মহিউদ্দিন ভূঁইয়া। স্কুলটি ২০১৫ সালে টিনের স্থাপনার মাধ্যমে পাঠদান শুরু করলেও দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আধুনিক নকশায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সম্পন্ন করা হয় দ্রুততম সময়ে। ২০১৯ সালের শেষের দিকে নবনির্মিত ভবনে ক্লাস শুরু হয়।

তিন তলা বিশিষ্ট এ স্কুলটির সামনে নান্দনিক ডিজাইনে নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ মিনার। স্কুলের বাউন্ডারির ভেতরে বিশাল জায়গায় শিক্ষার্থীদের হাঁটাচলা ও খেলাধুলার ব্যবস্থা রয়েছে। স্কুলে প্রবেশের মূল গেইটের সামনে পূর্ব পাশে আছে খেলার মাঠ। যেখানে শিক্ষার্থীরা ক্রিকেট ও ফুটবল খেলে। পান্ডুঘর দরবার শরীফের বাৎসরিক মাহফিলও হয় এখানে।

স্কুলের প্রতিষ্ঠাবর্ষ থেকেই নির্দিষ্ট আসনের জন্য ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে। ফলে শুরু থেকেই মেধাবী শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়েছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানসম্পন্ন শিক্ষার কারণে এই বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী এসেছে। অনেকেই আবার ভর্তি হতে না পারার আক্ষেপেও ভুগছে।

দৃষ্টিনন্দন ভবনটির নকশা প্রণয়ন ও নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর স্কুলটিতে ভর্তি ও শিক্ষাগ্রহণে স্বপ্ন দেখে শিক্ষার্থীরা। ভালো ও শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষক, শিক্ষার উৎকৃষ্ট মান ছাড়াও স্কুল ভবনটির নয়নাভিরাম সৌন্দর্য ও চারপাশের পরিবেশ মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য এটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। 

শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, স্কুলটির চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য এবং কঠোর নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে পাঠদানের কারণে অভিভাবকদেরও পছন্দের স্কুলে পরিণত হয়েছে এটি। শিক্ষার মান, শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির আন্তরিকতার কারণেও শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের প্রশংসা কুড়াচ্ছে স্কুলটি।

লেখক: শিক্ষার্থী, বিজেম। 

ঢাকা/মাহফুজ/মাহি