ক্যাম্পাস

কানাডায় পড়তে গেলে যেসব তথ্য জানতে হবে

কানাডা বৈচিত্রপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও জাতিগতভাবে বন্ধুসুলভ আচরণের জন্য বিশ্বখ্যাত। দেশটির মোট শিক্ষার্থীর ৫ ভাগের এক ভাগই বিদেশি। একজন বিদেশী শিক্ষার্থী হিসেবে কানাডায় থাকতে গেলে জানতে হবে বেশকিছু তথ্য।

কানাডাতে, উচ্চশিক্ষা দেওয়া হয় কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। ভিন্ন ভিন্ন প্রক্রিয়ায় শিক্ষাদান করা হয় সেখানকার কলেজগুলোতে। শুধু ক্লাসের পাঠেই পাস করা যায় না সেসব প্রতিষ্ঠানে। শিখতে হয় কর্মমুখী নানা কাজ। যে বিষয়েই আপনি শিক্ষা নেবেন সে বিষয়ে আপনাকে প্রচুর ব্যবহারিক কাজের মাধ্যমে নিজের দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আপনাকে ব্যস্ত থাকতে হবে ক্লাস, ল্যাব, টিউটোরিয়াল আর ওয়ার্কশপ নিয়ে। বৈচিত্রপূর্ণ এসব কাজের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রের জন্য তৈরি হতে হবে। সেখানকার অধ্যাপকেরা শিক্ষার্থীদের সাথে আলাদাভাবে কথা বলার সময় নির্ধারণ করে দেন। পাশাপাশি প্রত্যেক কোর্সের জন্য থাকেন একজন কোর্স নির্দেশক বা ল্যাব সহকারী।

তবে আপনি যদি একজন পিএইচডি শিক্ষার্থী হন, তবে ক্লাসের চাইতে বেশি আপনাকে গবেষণাতেই সময় পার করতে হবে। অনেক বেশি মাঠপর্যায়ের কাজের মধ্য দিয়ে যেতে হবে আপনাকে।

কানাডার বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই আবাসন সুবিধা প্রদান করে। অনেকটা আবাসিক ফ্ল্যাটের মতো সেসব ভবনে দুই বা তিন কক্ষের সাথে রান্নঘর ও শৌচাগার যুক্ত থাকে। সেগুলোতে থাকার ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ে কোনো বিভাজন করা হয় না। তবে যারা বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে থাকতে চায় না তারা আবেদন করে স্থানান্তরিত হতে পারে। পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে বাড়ি ভাড়া করে থাকার সুযোগও আছে।

কানাডায় উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সাধারণত বছরে ১৫ থেকে ৩০ হাজার কানাডিয়ান ডলার খরচ করতে হয়। এই খরচ টিউশন ফি, খাওয়া-থাকা, যাতায়াতসহ বিভিন্ন মৌলিক সুবিধার পেছনে ব্যয় হয়।

কানাডায় শিক্ষার পাশাপাশি কাজ করতে গেলে আপনার একটি বৈধ অনুমতিপত্র লাগবে। কানাডায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতর নানা প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়। তবে ক্যাম্পাসের যে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী কাজ করবে সেটি ক্যাম্পাসের প্রশাসন কর্তৃক নিবন্ধিত হতে হয়। এছাড়াও সপ্তাহে অনুর্ধ্ব ২০ ঘণ্টা ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করার সুযোগ আছে দেশটিতে।

কানাডার সংস্কৃতি ঐতিহাসিকভাবে ব্রিটিশ ও ফ্রেঞ্চ প্রভাবিত। তবে অভিবাসীদের জন্য দ্বার উন্মুক্ত করার পর থেকে কানাডা একটি মিশ্র সংস্কৃতির দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। কানাডিয়ানরা জাতিগতভাবে হকি খেলা খুব পছন্দ করে, ভালবাসে গানবাজনা। প্রায়ই কানাডিয়ানরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন খেলা ও গানের আয়োজন করে।

কানাডিয়ানরা খুবই ভদ্র এবং সমাজবদ্ধ জাতি। তারা ভিনদেশীদের নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চায় কখনো বাধা দেয় না। পাশাপাশি, সবচেয়ে নিরাপদ দেশ হিসেবেই কানাডা বিশ্বে পরিচিত। এই দেশের মানুষের মিশুক মনোভাব বিদেশ থেকে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সেখানে মানিয়ে নিতে খুবই সহায়তা করে।

কানাডায় খাবার নিয়ে খুব বেশি সমস্যায় পড়তে হয় না বিদেশী শিক্ষার্থীদের। কানাডিয়ানদের বিভিন্ন ফলের জুস বিশেষ পছন্দ। পূর্বে ব্রিটিশ ও ফ্রেঞ্চ কলোনিভুক্ত থাকায় দেশটিতে পাওয়া যায় বাহারি খাবারদাবার। যে কোনো সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরাই সেখানে নিজেদের স্বচ্ছন্দ্যমতো খাবার খেতে পারে।

দেশটির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলো পড়াশোনা শেষে দেশটির নাগরিকত্ব নেওয়ার সুযোগও প্রদান করে থাকে। তাই অনেক বিদেশী শিক্ষার্থী কানাডায় পড়তে বেশ আগ্রহী।