ক্যাম্পাস

দোতারার মাথায় পাখি দেখে বাউল গানে এসেছি: শিশির

গ্রামে গঞ্জে ও শহরে ধীরে ধীরে জনমনে জায়গা করে নিচ্ছে বাউল গান৷ সব বয়সী শ্রোতাই মুগ্ধ হয়ে শোনেন বাউল সংগীত৷ আর এই জনপ্রিয়তার পেছনে রয়েছে বাউল গানের সর্বজনীনতা। 

লালন সাঁইজি, শাহ আব্দুল করিমের পর যুগে যুগে অনেক বাউল-সাধকরা এই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন৷ ঠিক তেমনি একজন কিশোর বাউল সাব্বির আহমেদ শিশির৷ লোকজনের কাছে তিনি ‘শিশির বাউল’ নামে পরিচিত৷ যেমন তার সঙ্গীতায়ন, তেমন গানের সঙ্গে সঙ্গে তার মুখাভিনয়৷ দোতারা বা উকুলেলের সুরে মাতিয়ে তুলেন মানুষের মন৷ 

রাজশাহীর কিশোর এই বাউলের সঙ্গে কথা হয় রাইজিংবিডির। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান৷

রাইজিংবিডি: কেমন আছেন?

শিশির বাউল: জি, ভালো আছি৷ 

রাইজিংবিডি: আপনার পারিবার ও শৈশব নিয়ে জানতে চাই। 

শিশির বাউল: আমার পুরো নাম সাব্বির আহমেদ শিশির। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নিশিন্তপুর গ্রামে আমার বাড়ি৷ বাবা মো. লুৎফর রহমান। তিনি একজন স্কুল শিক্ষক৷ আমার মা মোসা. রাফিয়া খাতুন৷ বর্তমানে পরিবার নিয়ে এখানেই বসবাস করছি৷ শৈশবটা পরিবারের সঙ্গেই কেটেছে।

রাইজিংবিডি: গানের জগতে আপনার কীভাবে আসা?

শিশির বাউল: ছোটবেলায় আমি যখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ি তখন কুষ্টিয়ার লালন সাঁইজির মাজারে বেড়াতে গিয়েছিলাম৷ সেখানে এক সাধুর বাসায় গেলে উনার হাতে থাকা দোতারার দিকে আমার নজর পড়ে৷ 

বিশেষ করে দোতারার মাথায় থাকা একটি পাখি আমাকে খুব আকৃষ্ট করেছিল৷ পরে আমি একটি দোতরা কিনে আমার ওস্তাদ বাউল সাহাবুলের কাছে যাই৷ তার কাছেই শুরু করি দোতরা বাজানো। তার কিছু দিন পর থেকে আমি সংগীত শুরু করি৷ 

রাইজিংবিডি: কোথায় পড়াশোনা করছেন?

শিশির বাউল: বর্তমানে আমি বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়মিত সংগীত চর্চা করছি৷ 

রাইজিংবিডি: কোন ধরনের গান গাইতে বেশি পছন্দ করেন?

শিশির বাউল: আমি বেশিরভাগ লোকগান করতে পছন্দ করি৷ বিশেষ করে, লালন সাঁইজি ও শাহ আব্দুল করিমের গানসহ যত ধরনের লোকগান রয়েছে সবই করি৷ 

রাইজিংবিডি: অন্যান্য গান রেখে বাউল শিল্পী হচ্ছেন কেন?

শিশির বাউল: ওই যে প্রথম থেকেই বাউলের প্রতি আমার ভালো লাগা ছিল৷ সে কারণেই আসলে বাউল হওয়ার পেছনে এখন অবদি ছুটে চলছি৷ 

রাইজিংবিডি: আপনার গান শেখার পেছনে কার কার অবদান রয়েছে?

শিশির বাউল: অবদান বলতে গেলে, আমি পুরো অবদানটাই আমার পরিবারকে দেবো৷ বিশেষ করে আমার বাবাকে৷ যিনি আমার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন৷ তাছাড়া পরিবার থেকে সাপোর্ট না থাকলে আমি এত দূর আসতে পারতাম না৷ 

রাইজিংবিডি: ভবিষ্যতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান বা আপনার স্বপ্ন কী?

শিশির বাউল: স্বপ্নের কথা বলতে গেলে, আসলে এখনো আমি নিজেও জানি না স্বপ্ন কী! তবে আমার ইচ্ছে, যদি সুযোগ হয় তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগীতে পড়াশোনা করতে চাই৷

রাইজিংবিডি: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 

শিশির বাউল: রাইজিংবিডিকেও ধন্যবাদ। 

লেখক: শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।