ক্যাম্পাস

চায়ের দোকানে কাজের পাশাপাশি ছবি আঁকেন সুমনা 

ফাহিমা আক্তার সুমনা, চট্টগ্রামের জোবরা পি পি স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি বাবার কষ্ট লাঘবের জন্য বাবার ছোট চায়ের দোকানে সময় দেয়। প্রতিদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে চায়ের কাপে টুংটাং আওয়াজ উঠে সুমনার দোকানে। অভাবের সংসারে তার পড়ালেখা গৌণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

কোনো প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান ছাড়াই ছবি আঁকা রপ্ত করেছে সুমনা। আঁকাআঁকির নেশা তার সেই ছোটবেলা থেকেই। সময় পেলে ছবি আঁকতে বসে যায় সুমনা। বাবার দোকান সে সাজিয়েছে তার আঁকা ছবিগুলো দিয়ে, যা দোকানে আশা প্রতিটি ক্রেতাকে আকৃষ্ট করে। তাই অনেকে এই দোকানকে চেনেন সুমনা আর্ট গ্যালারি হিসেবে। 

সুমনা তার আঁকাআঁকির জন্য ইতোমধ্যে ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগিতায় প্রথম ও এক টাকায় শিক্ষার চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগিতা প্রজেক্ট আগামীতে চ্যাম্পিয়ন হয়। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সে জিতেছে প্রায় ১২টির মতো পুরস্কার। 

চৌদ্দ বছর বয়সী সুমনা আর্ট নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। সুমনা বলে, ‘আমার স্বপ্ন আমি অনেক বড় চিত্রশিল্পী হবো। আমার ছবি একদিন দেশ বিদেশে প্রদর্শনী হবে। আঁকাআঁকি করতে গিয়ে রঙ-পেন্সিল নিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়। এতকিছুর পরও ভাইবোন ও বাবার সহযোগিতা সবসময় পাই।’

সুমনার বাবা আবু সাঈদ বলেন, ‘ছোট ব্যবসায় থেকে উপার্জিত আয় দিয়ে পাঁচ সন্তানের ভরণপোষণ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তবে যতদিন বেঁচে আছি, ততদিন সাধ্যমতো মেয়ের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করে যাবো।’ 

লেখক: শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ।