বরিশালের অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্র অয়ন চক্রবর্তী। পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে এরই মধ্যে প্রাপ্তির ঝুলিতে তুলে নিয়েছেন অনেক পুরস্কার। হয়েছেন সেরাদের সেরা। চলুন তার এই সাফল্যমণ্ডিত পথচলার বিভিন্ন কথা শুনে আসা যাক। অয়ন চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলেছেন বদরগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী হাবিবুল্লাহ মিসবাহ তুবা।
হাবিবুল্লাহ মিসবাহ তুবা: ‘জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক রচনা প্রতিযোগিতা’য় কলেজ পর্যায়ে সেরা নির্বাচিত হওয়ায় আপনাকে অভিনন্দন। আপনার অনুভূতি জানতে চাই।
অয়ন চক্রবর্তী: শব্দ এই অনুভূতি প্রকাশে ব্যর্থ। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, ‘দ্য ডেইলি স্টার’-এর সম্পাদক মাহফুজ আনাম ও ‘বেঙ্গল ফাউন্ডেশন’-এর চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটুর মতো বাংলাদেশের মহীরুহতুল্য ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতিতে সম্মানিত হওয়ার অনুভূতি কিংবা তাদের উপস্থিতিতে নিজের বক্তব্য তুলে ধরার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের ক্ষমতা আমার নেই।
পাশাপাশি, এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে শুধু অর্থপুরস্কারই অর্জিত হলো না; তার থেকে অনেকগুণ বেশি অর্জিত হয়েছে জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাকের মতো জ্ঞান তপস্যায় নিজেকে নিয়োগ করার মহত্তম অনুপ্রেরণা।
তুবা: আপনার বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাই।
অয়ন: নিজেকে শাণিত করার সবচেয়ে বড় উপায় হচ্ছে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ। নিজেকে প্রমাণ করার সর্ববৃহৎ ক্ষেত্রও হচ্ছে প্রতিযোগিতা। সুতরাং নিজেকে ঋদ্ধ করার সুযোগ পাচ্ছি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে।
তুবা: কে সবচেয়ে উৎসাহ জুগিয়েছেন?
অয়ন: বাংলার শিক্ষিকা মনিকা রায় ঠাকুরের অনুপ্রেরণায় ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’-এ অংশ নেওয়া। তারপরের সবকিছুতে মা-বাবাই উৎসাহ দিয়েছেন। পাশাপাশি, আমার শুভাকাঙ্ক্ষী মহলের অনুপ্রেরণাও আমাকে প্রতিমুহূর্তে ঋণী ও সমৃদ্ধ করে।
তুবা: সেরা বাংলাবিদ নির্বাচিত হয়েছিলেন, অভিজ্ঞতা এবং অনুষ্ঠানের স্মৃতি সম্পর্কে জানতে চাই।
অয়ন: বাংলাবিদের মঞ্চ আমার জীবনে নতুন আলোর দিশা দেখিয়েছে। আমার চিন্তা-চেতনা-মনন সবকিছুতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে এই মঞ্চ। আমার এই ক’বছরের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্তগুলো কাটিয়েছি বাংলাবিদের জার্নির সময়টায়।
তুবা: আপনার প্রিয় লেখক ও প্রিয় ব্যক্তিত্ব?
অয়ন: প্রিয় লেখক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। প্রিয় ব্যক্তিত্ব বীরাঙ্গনা মা রমা চৌধুরী।
তুবা: ভবিষ্যত ভাবনা কী?
অয়ন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে পড়তে চাই৷ আন্তর্জাতিক মহলে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন দেখি।
তুবা: এক নজরে আপনার অর্জনগুলো জানতে চাই।
অয়ন চক্রবর্তী: শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে ‘শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদ’-এর রচনা প্রতিযোগিতায় সারাদেশে শীর্ষ ১০ এর সম্মাননা-২০১৮।
‘অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট’ ও জার্মানির ‘ব্রেড ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’-এর আয়োজনে শিশু অধিকার বিষয়ক জাতীয় রচনা প্রতিযোগিতা-২০১৮ ও ২০১৯ এ সারাদেশে দু’বার প্রথম।
দেশের সবচেয়ে বড় রিয়্যালিটি শো (অংশগ্রহণের দিক থেকে) ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ- ২০১৯’-এ তৃতীয় বর্ষে সারাদেশে তৃতীয়।
জাতীয় পর্যায়ে বহুবার বরিশালের প্রতিনিধিত্ব করার স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তুলে দেয় ‘উৎসাহ’ সম্মাননা ও ১ লাখ টাকার চেক।
‘জাতীয় ত্বকী চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা-২০২০’-এ সারাদেশে রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে ‘ত্বকী পদক’ অর্জন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘কবি নজরুল ইনস্টিটিউট’ কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় রচনা প্রতিযোগিতা-২০২১-এ সারাদেশে দ্বিতীয়।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা ‘দ্য ডেইলি স্টার মুক্তিযুদ্ধ অলিম্পিয়াড- ২০২১’-এ সারাদেশে প্রথম।
‘বুক এম্পোরিয়াম বাংলাদেশ অলিম্পিয়াড-২০২১’-এ সারাদেশে প্রথম। প্রথম পুরস্কার ছিল ল্যাপটপ, ১৯৭১ টাকার বই, ক্রেস্ট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা স্মারক।
‘জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশন জাতীয় রচনা প্রতিযোগিতা-২০২১’-এ সারাদেশে প্রথম।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগিতায় নানা পুরস্কার পেয়েছি৷ জেলা পর্যায়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বহুবার প্রথম হয়েছি। বিভাগীয় পর্যায়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায়ও প্রথম হয়েছি একাধিকবার। বক্তৃতা ও বারোয়ারি বিতর্কেও সেরার পুরস্কার অর্জন করেছি।