ক্যাম্পাস

ভালো কাজে থাকেন তিনি

‘মো. জাহাঙ্গীর আলম সুমন ফাউন্ডেশন’ একটি অলাভজনক ও স্বেচ্ছাসেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এর উদ্দেশ্য অভাবী, অসহায় মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো। ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি থেকে যাত্রা শুরু হয় ফাউন্ডেশনটির।

ঢাকা সিটি কলেজের ‘ডিপার্টমেন্ট অব কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর সহকারী অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম সুমন মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছা থেকেই শুরু করেন এই ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম। শিক্ষকতায় জীবনের প্রায় ১৩টি বছর কাটিয়েছেন ইতোমধ্যে। প্রতিনিয়ত মানুষের জন্য কিছু করতে পারাটা তার কাছে সৌভাগ্যের ব্যাপার।

ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ২০১৯ সালে ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার মো. আবু সুফিয়ানকে আর্থিক সহায়তার জন্য একটি অটোরিকশা কিনে দিয়েছেন। সেবছর রমজানের শেষ দিনে কল্যাণপুরের ‘Child and Old Age Care’ বৃদ্ধাশ্রমে চাল এবং মসুর ডাল দিয়েছেন। পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে সেবছর মালিবাগ বস্তি, খিলগাও রেলগেইট বস্তি ও খিলগাও বটতলা বস্তিতে ১০০টি অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ করেছেন। 

এদিকে ২০২০ সালেও রমজানে বসিলাতে ১০০ জন শ্রমজীবী ও অসহায় মানুষের মাঝে ঈদসামগ্রী উপহার হিসেবে বিতরণ করেন। এছাড়াও করোনা পরিস্থিতিতে সাহায্যের জন্য গত বছরের ২৫ মার্চ শ্যামলী ও মোহাম্মদপুরের আশপাশের এলাকায় বেশ কিছু শ্রমজীবী ও গরীব মানুষের মাঝে নিত্য প্রায়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করেছেন।

এবছরও নতুন করে বৃহৎ পরিসরে শুরু করার উদ্দেশ্যে রমজানে ১০০ জন অসহায় মানুষের মাঝে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করেছেন। করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে, স্বল্প কিছু ভলান্টিয়ারের উপস্থিতিতে এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন তিনি। খাদ্যসাসগ্রীর মধ্যে ছিল ছোলা, পেঁয়াজ, আলু, তেল, মসুর ডাল, চিনি, খেজুর ইত্যাদি।

আগে নির্দিষ্ট ইভেন্টের জন্য শুধু ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেওয়া না হলেও বর্তমানে নতুন করে ফাউন্ডেশনের জন্য ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখন তার সঙ্গে মোট ২৭ জন কাজ করছেন। তার ইচ্ছা, ফাউন্ডেশনের জন্য এমন কিছু করে রেখে যাওয়া, যেন সে না থাকলেও ফাউন্ডেশন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সাহায্য করে যেতে পারে। নিজ অর্থ ব্যতীত কোনো অনুদান সংগ্রহ করেন না তিনি। সব ভলান্টিয়ার শুধু শ্রম ও মেধা দিয়ে ফাউন্ডেশনটির সঙ্গে জড়িত আছেন বলে জানান তিনি। সাময়িক বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হলেও দৃঢ় মনোবল নিয়ে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।

ফাউন্ডেশন নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ফাউন্ডেশন নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বেশ বৃহৎ। আশা করি এই ফাউন্ডেশন একদিন অনেক বড় পরিসরে মানুষের সাহায্য করতে সক্ষম হবে। লোক দেখানো কখনোই আমার উদ্দেশ্য নয়, তবে আমি চাই ফাউন্ডেশনের কাজ দেখে সামর্থ্যবান মানুষ যেন উৎসাহিত এবং অনুপ্রাণিত হয় সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে সাহায্য করার জন্য।’ 

ছাত্রদের উদ্দেশ্যে মো. জাহাঙ্গীর আলম সুমন বলেন, ‘আমার যেসব ছাত্র/ছাত্রী আমাকে সর্বদা সমর্থন করেছেন, তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আপনাদের দোয়ায় এখন পর্যন্ত ভালো উদ্দেশ্যে কাজ করে যেতে পারছি। একটা কথা মনে রাখতে হবে, ভালো ছাত্র সবাই হতে পারে, কিন্তু ভালো মানুষ সবাই হতে পারে না। এমনভাবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে, যেন নিজ আত্মার পরিশুদ্ধি হয় এবং চারপাশের মানুষও ভালো থাকে, নিজের জন্য যেন অন্যকারো কোনো ক্ষতি না হয়।’

লেখক: শিক্ষার্থী, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ।