ক্যাম্পাস

কৃষকের পাশে ‘শুনতে কি পাও’ 

‘বাবা তুমি যে ফোন দিছিলা, আমি তো ভাবছিলাম হগলের মতো তোমরাও খোঁজ নিয়া আর আইবা না। ত্রাণ পাইছি বাবা। এত ভালা চাউল আগে কেউ দেয় নাই। ভাতটা রাইন্ধাই তোমারে ফোন দিলাম। আল্লাহ তোমার ভালো করুক।’ 

‘শুনতে কি পাও’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের একজন স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে এভাবেই মনের প্রশান্তি ব্যক্ত করছিলেন কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার ছাতিরচর ইউনিয়নে গরম ঝড়ো বাতাসে (হিট শক) ক্ষতিগ্রস্ত একজন বোরো ধান চাষি নারী। সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা ফোন দিয়েছিলেন তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য। উপহার পাওয়ার পর অত্যন্ত খুশি এই অসহায় চাষিরা।

সম্প্রতি নেত্রকোণা, গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের হাওড় এলাকায় প্রচুর পরিমাণ জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে কয়েক ঘণ্টার গরম বাতাসে। ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ৬৮ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই ঘটনায়। কৃষি গবেষকেরা এই ক্ষতির কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন গরম ঝড়ো বাতাস বা ‘হিট শক’।

বর্তমানে করোনার কারণে এমনেই মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হচ্ছে না, তার ওপরে এমন দুর্যোগ কৃষকদের মারাত্মক ক্ষতি করেছে। 

সংগঠনের সভাপতি প্রান্তিক চৌধুরী অর্ঘ্য বলেন, ‘একটি কৃষি প্রধান দেশে বসবাস করে সেই কৃষকদের পাশে যদি না দাঁড়াই, তবে আমাদের খাবারটা আসবে কোথা থেকে? এমন চিন্তাভাবনা থেকেই এই ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের পাশে দাঁড়ানো। আশাকরি যতটুকু পারি এভাবেই অসহায়দের পাশে দাঁড়াবো।’ 

এরই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জের ২৭৫ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে শনাক্ত করে প্রথম অবস্থায় রোববার (১ ও ২ মে) গড়ুই এবং ছাতিরচর ইউনিয়নের ১০০ জন কৃষকের পরিবার পেলো খাদ্যসামগ্রী উপহার। 

সংগঠনের সদস্যদের প্রত্যাশা, কৃষকদের দুর্দিনে ‘শুনতে কি পাও’-এর মতো আরও যেসব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে, তারাও সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। কারণ, কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশ, সমৃদ্ধ হবে বাংলাদেশ। 

উল্লেখ্য, ‘শুনতে কি পাও’ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এটি দেশের বিভিন্ন বিপর্যয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায়।