ক্যাম্পাস

জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে ষড়জের ‘চিন্তার ঝড়’

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক আয়োজিত ২৪তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকিব আকরাম ষড়জের ‘চিন্তার ঝড়’ শিরোনামে একটি চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবম ব্যাচের (২০১৩-১৪ সেশন) ও চারুকলা বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

প্রদর্শনীর নীতিমালা অনুযায়ী ২১ বছরের উর্ধে বাংলাদেশের ৭৮৬ জন শিল্পীর সহস্রাধিক শিল্পকর্মের আবেদন জমা পড়ে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় মাসব্যাপী এই চারুকলা প্রদর্শনীতে ৩২৩ জন শিল্পীর ৩৪৭টি শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। প্রদর্শিত শিল্পকর্মগুলোর মধ্যে রয়েছে চিত্রকলা ১৫৭টি, ছাপচিত্র ৫৩টি, আলোকচিত্র ১৭টি, ভাস্কর্য ৪৭টি, প্রাচ্যকলা ১০টি, মৃতশিল্প ৭টি, কারুশিল্প ২০টি, গ্রাফিক ডিজাইন ৫টি, স্থাপনাশিল্প ১৮টি, নিউ মিডিয়া আর্ট ৭টি, পারফরমেন্স আর্ট ৬টি। এর মধ্যে নিউ মিডিয়া আর্ট ক্যাটাগরিতে প্রদর্শিত হয়েছে আকিব আকরাম ষড়জের চিত্রকর্মটি।

চিত্রকর্মের বিষয়ে আকিব আকরাম ষড়জ বলেন, চিত্রকর্মটি করোনা প্যানডেমিকের সময় করা। দীর্ঘ দিন ধরে লকডাউন আর অস্থিতিশীল অবস্থা, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি আর সাথে দেশে ঘটতে থাকা বিভিন্ন দুর্ঘটনা থেকে দুশ্চিন্তা আসতো। লকডাউনে সারাদিন ঘরে বন্দী থাকা হয়েছে। দেখার মতো শুধু ফোন আর কম্পিউটার স্ক্রিন ছাড়া আর কিছু ছিল না। এসময় শিল্পীর নানা ধরনের আনন্দ, দুঃখ, বিষন্নতা আর দিনভর নানা চিন্তা-দুশ্চিন্তা দিয়েই সময় কেটেছে। প্রায় ১২ মাস এত দীর্ঘ সময় লকডাউন ছিল। এসময় কোথাও যাওয়াও হয়নি। তাই এসময়টাতে কোনো শৈল্পিক কাজে মন দেওয়ার একটা প্রচেষ্টা ছিল। কিন্তু প্যানডেমিকের মধ্যে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা আর ঘণ্টায় ঘণ্টায় নিউজ চলে আসাটা খুব হতাশ করতো। তখন সেইসব চিন্তা-দুশ্চিন্তা আর অনুভূতি থেকেই এই কাজটার সূচনা হয়।

তিনি আরও বলেন, কাজটা নিউ মিডিয়া পেইন্টিং। ৪২ ইঞ্চি, ৬০ ইঞ্চিতে আঁকা। এটা স্টোর্ম অব থটস্ বা চিন্তার ঝড় সিরিজের একটা কাজ।

চিত্রকর্মটির ডিজাইন সম্পর্কে তিনি বলেন, ছবিতে আধুনিকতার সাথে ঐতিহ্যের একটা বিশাল সংমিশ্রণ রয়েছে। পেছনে সাদাকালো টেক্সচারটা আমাদের ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি থেকে নেওয়া। আর প্রধান মুখাবয়ব আমাদের ঐতিহ্যবাহী ট্যাপা পুতুলের আদলে করা হয়েছে।

নিজের চিত্রকর্ম শিল্পকলা একাডেমিতে প্রদর্শিত হওয়ার অনুভূতি জানিয়ে ষড়জ বলেন, আমি প্রথমে জেনে খুব খুশি হয়েছি যে আমার শিল্পকর্ম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে করোনা প্যানডেমিকের কারণে যে হতাশা আর বিষন্নতা পেয়ে বসেছিল, তা অনেকটাই কমে এসেছে এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে। এখন আমি আরও শিল্পকর্ম তৈরির অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। আমি আমার বিভাগীয় শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাদের গাইডলাইন আমার জন্য এক অসামান্য প্রাপ্তি ছিল।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৯ জুন নির্বাচন কমিটির বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চিত্রকর্মটি চূড়ান্ত প্রদর্শনীর জন্য মনোনীত হয়। এর আগে গত ২৯ জুন রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ২৪তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। এই প্রদর্শনী চলবে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ায় এবার ভার্চুয়ালি এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।