ক্যাম্পাস

২০ বছর বয়সে ডিজিটাল এজেন্সির মালিক সৌরভ

‘সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা’ কথাটি যেমন সহজ, তেমনি জীবনে বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন। জীবনের প্রতি বিভিন্ন মোহের কারণে সবাই বৃত্তের বাইরে চিন্তা করতে পারেন না। যারা পারেন, তারাই সফল। এমন একজন স্বপ্নবাজ তরুণের গল্প শোনাবো আজ।

ইসতিয়াক আহমেদ সৌরভ। বাংলাদেশের একজন তরুণ উদ্যোক্তা, ওয়েব ও গ্রাফিক ডিজাইনার, মিউজিক্যাল আর্টিস্ট। 

তিনি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা সুলতান মাহমুদ এবং মা ইসমত আরা। ছোট থেকেই প্রযুক্তির প্রতি আলাদা একটা ঝোঁক ছিল তার। খুব পটুও ছিলেন বটে। মাত্র ১৫ বছর বয়সে ওয়েব ডিজাইন এবং গ্রাফিক ডিজাইনে স্কিল ডেভেলপমেন্ট শুরু করেন।

সৌরভ খুব অল্প বয়সেই লোকাল মার্কেটে তার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করেন এবং অনেকটা সফলও হয়েছেন। সবসময় তার মাথায় ঘুরপাক খেতো কিভাবে একটি ইউনিক ব্যবসা দাঁড় করানো যায়। ১৯ বছর বয়সে ‘ব্র্যান্ডমশাই’ নামে একটি ব্র্যান্ডিং এবং ডিজিটাল এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করেন।

ব্র্যান্ডমশাই হচ্ছে এমন একটি ডিজিটাল এজেন্সি, যেখানে ব্র্যান্ডিং থেকে শুরু করে ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট, ব্যবসার আইডিয়াসহ আরও বিভিন্ন সমাধান পাওয়া যাবে সহজেই। বাংলাদেশে এমন অনেক স্টার্টআপ কোম্পানি আছে, যারা সঠিক ব্র্যান্ডিংয়ের কারণে মানুষকে ঠিকভাবে আকৃষ্ট করতে পারছে না। এই ধরনের ছোটখাটো স্টার্টআপ যেন খুব সহজেই ব্যবসা শুরু করতে পারে, সেই সমাধানই দেয় ব্র্যান্ডমশাই। শুধু তাই নয়, ব্র্যান্ডমশাইয়ে পাওয়া যায় সুন্দর সুন্দর ব্র্যান্ডেবল ডোমেইন নাম।

ইসতিয়াক আহমেদ সৌরভ বলেন, শুরুটা কখনো সহজ হয় না। তবুও ছোট থেকে বাবা-মা, ফ্যামিলির কেউই আমাকে বাধা দেয়নি এ কাজে। তারা আমাকে নিয়ে গর্বই করতেন। যথেষ্ট সাপোর্ট পেয়েছি সবার। প্রযুক্তির প্রতি আমার আলাদা একটা ভালোবাসা ছিল, যেটা সচরাচর সবার মধ্যে থাকে না।

আমার বয়স যখন ১৩ বছর, তখন আমার কাছে কোনো স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটার ছিল না। একটা জাভা ফোন ছিল, যেটায় আমি সবসময় গুগল করতাম কিভাবে একটি ওয়েবসাইট বানানো যায়। সেসময় মোবাইল দিয়েই নিজের জন্য একটা ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলেছিলাম। পরে আমার কাছে কম্পিউটার, স্মার্টফোন আসে এবং স্কিল ডেভেলপমেন্টের স্পিড বেড়ে যায়। ওয়েব ও গ্রাফিক ডিজাইন ভালোভাবে শেখা শুরু করি। আমি কোনো সমস্যায় পড়লে সবসময় গুগল করতাম, ইউটিউবে ভিডিও দেখতাম।

শুরু থেকেই কাজের প্রতি আলাদা একটা স্পিরিট কাজ করতো। আমি মনে করি, সফলতা অর্জনের কোনো শর্টকার্ট পথ নেই, সফলতা অর্জন করতে হলে আপনাকে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হবে। বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি আসবেই, থেমে থাকলে তো হেরেই গেলাম।

শখের কথা জিজ্ঞাসা করলে সৌরভ বলেন, শখ বলতে ছোট থেকেই আমি খুব ক্রিকেট প্রেমী। ক্রিকেট খুবই ভালো লাগে। এবং একটু-আধটু সংগীত চর্চা ছিল। আমার প্রিয় জেঠা (চাচা) জনাব শামছ উদ্দিন। তিনি একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, পাশাপাশি একজন সংগীতশিল্পীও। তার কাছেই আমার সংগীতের হাতেখড়ি। মাঝে মাঝে বিভিন্ন গান শুনতে এবং প্রিয় গানগুলো কভার করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে স্কিল ডেভেলপমেন্ট তো আছেই।

লেখক: ফিচার লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী।