ক্যাম্পাস

প্রান্তিক জীবনের কথা বলে আমিনুলের ছবি

একটা ছবি শুধুই একটা ছবি নয়। একটা ভালো ছবির পেছনে থাকে অনেক গল্প, স্মৃতি, ভালো লাগা, দুঃখ ও অনেক পরিশ্রম। যারা ছবি তুলতে ভালোবাসেন, তাদের তোলা ছবি অমূল্য রতন। দেখা যায়, ফটোগ্রাফাররা একসময় ক্যামেরা ও লেন্সের মায়ায় পড়ে যান। আমিনুল ইসলাম বুলবুল তাদের মধ‌্যে একজন। তার ছবি তোলার প্রতি ভালোবাসা এবং ক্যামেরার প্রতি মায়া দুটোই প্রবলভাবে কাজ করে। 

তিনি একজন শখের ফটোগ্রাফার। বর্তমানে পড়াশোনা করছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে। আমিনুল চান, প্রকৃতি এবং মানুষের নানা মুহূর্ত ক‌্যামেরাবন্দি করার প্রতি তার যে তীব্র টান কাজ করে, সেটা যেন আজীবন থাকে। 

২০১৫ সাল থেকে তিনি ছবি তোলেন। তখন তিনি ছিলেন দশম শ্রেণির ছাত্র। আপন বড় ভাই আবু হায়দার মানিকের ডিএসএলআর এবং স্মার্টফোন নিয়েই শুরু হয় পথচলা। ধীরে ধীরে তার এই শখ পরিণত হয় নেশায়।  

প্রথমদিকে বন্ধুবান্ধব, এলাকার বড় ভাই, ইউটিউবের টিউটোরিয়াল ছিল ছবি তোলা শেখার মাধ্যম। এডিটিংয়ের কাজও শিখেছেন ইউটিউব দেখেই।

বাংলাদেশের বিখ্যাত ফটোগ্রাফার মাহতাব লিটন তার আইডল। এছাড়াও ছবি তোলার ক্ষেত্রে আমিনুল তার পরিবারের সবার কাছ থেকে কমবেশি অনুপ্রেরণা পান। বিশেষ করে তার বড় ভাই আবু হায়দার মানিকের কাছ থেকে। বিভাগের কোনো প্রোগ্রাম হলেই ছবি তোলার জন্য ডাক পড়ে আমিনুলের। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়ার পর প্রথমবর্ষে থাকাকালীন আমিনুল একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা উপহার পান তার বড় ভাইয়ের কাছ থেকে। সেই থেকে মুহূর্তবন্দি করার নেশা তার বেড়ে যায় বহুগুণ। 

আমিনুলের ছবি তোলার বয়স হয়ে গেছে প্রায় সাত বছর। এত দিনে তার অসংখ্য ছবি তোলা হয়েছে। ছবির মাধ্যমে তিনি প্রান্তিক পর্যায়ের জীবনধারা তুলে ধরতে চান সবসময়।

নিজের ছবি তোলা নিয়ে এখনই তেমন বড় কিংবা আহামরি কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি শুধু তার মনের মতো করে ছবি তুলে যেতে চান সবসময়। পড়ালেখা শেষ করে চাকরি বা ব্যবসা যেটাই করেন না কেন, তার নিজের ভালো লাগার জন্য, খুশি থাকার জন্য তিনি ছবি তুলে যেতে চান সবসময়। 

ছবি তোলার নানা খুঁটিনাটি নিয়ে কথা হয় আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, সামনে যা পেতাম, তাই তুলতাম। আশেপাশের নানা ঘটনা ফ্রেমবন্দি করার নেশা দিন দিন বাড়তে থাকে, নিজ চেষ্টায় একটু একটু করে শেখার চেষ্টা করতাম। কিন্তু প্রথমদিকে ক্যামেরার অনেক সীমাবদ্ধতা থাকার কারণে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হতো। 

ছবিয়াল আমিনুল ও তার ছবির চরিত্র

এদিকে তখন ডিএসএলআর ক্যামেরা নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় চান্স পাওয়ার প্রথম বছরের মধ্যেই ডিএসএলআরের স্বপ্ন পূরণ করেন আমার বড় ভাই আবু হায়দার মানিক। তারপর থেকে ক্যামেরার সঙ্গে সেই প্রেম আরও বাড়তে থাকে, বলেন তিনি। 

লেখক: শিক্ষার্থী, নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ‌্যালয় (নোবিপ্রবি)।