ক্যাম্পাস

শান্তির পল্লীতে একদিন 

ঈদ পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সফরগুলো শিক্ষার্থীদের করে তোলে সজীব ও প্রাণবন্ত৷ শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রঙিন অভিজ্ঞতাগুলোর মধ্যে অন্যতম থাকে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা৷ ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সিএসই বিভাগেও তেমনি অন্যসব বছরের মতো দূরপাল্লার ভ্রমণকে বাদ দিয়ে একদিনের একটি ভ্রমণের আয়োজন করে৷ সিদ্ধান্ত হয় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক এবং শিল্পীর গড়া জাদুর বাড়ি নুহাশ পল্লী যাওয়ার।

শহরের যান্ত্রিক কোলাহল থেকে মুক্তির জন্য, মুক্ত বাতাসে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য, রুটিনমাফিক জীবনটাকে কয়েকঘণ্টার জন্য ছুটিতে পাঠিয়ে আমরা ছুটেছিলাম গাজীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক এবং জীবনকে শিল্পের পরশ দিতে এক শিল্পীর গড়া জাদুর বাড়ি নুহাশ পল্লীতে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সিএসই বিভাগের ডে-৬৪ এবং ডে-৭০ (১ম শিফট) ব্যাচের শিক্ষর্থীরা ইউনিভার্সিটির গ্রিন রোড ক্যাম্পাস থেকে একইসঙ্গে আনন্দ উল্লাস করতে করতে সাফারি পার্কের উদ্দেশে রওনা দেয়।

সেখানে পৌঁছে প্রথমেই ছিল কোর সাফারি ভ্রমণ। বাসে করে বিভিন্ন পশু-পাখি খুব কাছ থেকে দেখার আনন্দটাই ছিল অন্যরকম। বিশেষ করে বাঘ, সাদা সিংহ খুঁজে বের করার সময়টা ছিল বেশ উত্তেজনাপূর্ণ। আরও ছিল জেব্রা, জিরাফ, হরিণ, বানর, ভাল্লুক ইত্যাদি। কোর সাফারি ভ্রমণ শেষে সবাই সবার মতো করে পার্ক পরিদর্শন করেন। মিউজিয়াম, বিভিন্ন পাখি, মাছ, কুমির, কচ্ছপ, কালো মুখো বানর, সাপ আরও অনেক অনেক পশুপাখি একসঙ্গে দেখার এক অনন্য সুযোগ ছিল এই পার্কে।সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল ঝুলন্ত সেতু আর ঠিক তার উল্টো পাশে থাকা হাতির পাল। অনেকে আবার হাতির পিঠেও চড়েছেন।

কিছু ইভেন্টের মাধ্যমে ট্যুরকে করে তোলা হয়েছিল আরও আনন্দমুখর। মেয়েদের জন্য ছিল পিলো পাসিং, বেলুন ফুলানো। আর ছেলেদের জন্য ছিল লক্ষ্যে বল ছোড়া ও বেলুন রক্ষা করার মজার ইভেন্ট। খেলায় বিজয়ীদের সুন্দর সব গিফট আইটেমের মাধ্যমে পুরস্কৃত করা হয়েছে।

নুহাশ পল্লী ছিল এক টুকরো শান্তির জায়গা। ছোট্ট তবে গভীরতা আর শিল্পের ছোঁয়ায় ভরপুর। কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ যেন তার লেখার মতোই বাড়িটাকে সাজিয়েছিলেন নান্দনিকতার ছোঁয়ায়। এখানে ছিল কতশত গাছ, দোলনা, দাবা বোর্ড, ট্রি হাউজ, কবুতরের বাসা, কাঠগোলাপ ঘেরা সুবিশাল বাঁধানো পুকুর আর লেখকের বৃষ্টি বিলাস। তার বানানো শৈল্পিক বাড়িতেই তিনি আছেন চিরনিদ্রায়।

শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী সবাই বন্ধুর মতো মিলেমিশে দিনটি উপভোগ করেছে। একসঙ্গে ছবি তুলেছে, গান গেয়েছে। আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছিল সবাই। পুরো আয়োজন সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য অর্গানাইজার হিসেবে ছিলেন উভয় ব্যাচের কোর্স কো-অর্ডিনেটর প্রভাষক আল বশির সাহেব এবং তাকে সহযোগিতা করার জন্য ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে ছিলেন মো. মুরসালাতুল ইসলাম পল্লব, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. মুহাইমেনুল ইসলাম রাতুল এবং যারিন জাসিয়া ঐশী।

বেলা শেষে র‍্যাফেল ড্র করার মাঝেই শেষ হয় আয়োজন। 

লেখক: শিক্ষার্থী, সিএসই বিভাগ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।