ক্যাম্পাস

প্রকৃতিতে প্রশান্তির নিঃশ্বাস

গ্রীষ্মের দাবদাহ শেষে প্রকৃতিতে এসেছে বর্ষাকাল। নীল আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা আর হালকা ঝড়ো হাওয়া প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে নতুন রূপ। কখনো ভারী বৃষ্টি, কখনো আবার রিমঝিম করে ঝরছে বর্ষার বারিধারা। মেঘের আড়াল দিয়ে সূর্যিমামা উঁকি দিচ্ছে। যেন আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে জীবনে সবসময় দুঃখ থাকে না। দুঃখের পরে সুখ আসে।

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সৌন্দর্যের অন্যতম নিদর্শন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। বছরের প্রতিটি ঋতুতেই নিজেকে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলে। বর্ষাকালেও তার ব্যতিক্রম না। বর্ষা মৌসুমে যখন চারদিক ভিজে ওঠে তখন আমাদের মনও হয় সিক্ত। মৌন নীলের ইশারায় আমাদেরও প্রাণে জেগে ওঠে অজানা কামনা। আমরা হয়ে উঠি মনে-মননে বর্ষামুখর। ইবিতে বর্ষার শোভা অতুলনীয়। কারণ এখানে রয়েছে সবুজ শ্যামল গাছপালা, বিস্তৃত মাঠ, পিচ ঢালা পথ। যেন ফিরে পায় তরতাজা নতুন জীবন। অনেকে আবার ফিরে পায় হারানো শৈশবকে।

বৃষ্টির সময় শিক্ষার্থীরা মাঠে দৌড়াদৌড়ি, খেলাধুলায় মেতে উঠে। ফুটবল, গোল্লাছুটসহ হরেক রকমের খেলা যা আমাদের শৈশবকে মনে করিয়ে দেয়। কেউ আবার বৃষ্টিস্নাত সবুজ ঘাসে স্লিপ দিয়ে কতদূর যেতে পারে সেই প্রতিযোগিতা করতে থাকে। কেউ আবার একাকী বৃষ্টিতে ভিজে মনের অজান্তে হারিয়ে যায় অজানা ঠিকানায়।

এ বৃষ্টিতে তপ্ত ধরণী মুহূর্তেই হয়ে ওঠে শীতল সজীব। দ্রুতই মন নেচে ওঠে ময়ূরের মতো করে। উচাটন মন তখন কিছুতেই ঘরে থাকতে চায় না। প্রিয়জনের সান্নিধ্য পাওয়ার আশায় হৃদয় ব্যাকুল হয়ে ওঠে। মনের অজান্তেই গেয়ে ওঠে কেউ- ‘এই মেঘলা দিনে একলা ঘরে থাকে নাতো মন/কাছে যাবো, কবে পাবো/ ওগো তোমার নিমন্ত্রণ’।

বর্ষাকলের অন্যতম ফুল হলো কদম ফুল। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় দেখা মেলে সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এই ফুল। এই ফুলের গন্ধ না থাকলেও সৌন্দর্য দিয়ে মাতিয়ে রাখে শিক্ষার্থীদের। প্রেমিকাকে কদম ফুল দিয়ে মুগ্ধ না করলে নাকি প্রেমিকারা রাগ, অভিমান করে বসেন। অনেকে আবার ছবি তোলার জন্যই এই ফুলের সান্নিধ্যে যায়।

চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুন্নবী সৌরভ বলেন, প্রতিদিনের একই রকম জীবনযাপনে যখন একঘেয়েমি চলে আসে বর্ষা তখন মনে প্রশান্তি এনে দেয়। ফিরে যায় শৈশবের হারানো দিনগুলোতে। বৃষ্টিতে কত ভিজেছি, খেলেছি, মজা করেছি। ক্যাম্পাসে এসে ব্যস্ততার কারণে আর ভেজা হয় না।

জয়া রায় নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, বৃষ্টিস্নাত পিচঢালা পথে হাঁটতে আমার খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে ক্যাম্পাসের প্যারাডাইস রোডে হাঁটলে মনে হয় যেন দর্শনীয় স্থানে এসেছি।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়