ক্যাম্পাস

ববির মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসক নিয়মিত না থাকার অভিযোগ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসক নিয়মিত না থাকার অভিযোগ উঠেছে। অসুস্থ শিক্ষার্থীরা মেডিকেল সেন্টারে গেলে সেবা না পেয়ে চলে যেতে হয়। প্রায় সময়ে দেখা যায়, অসুস্থ শিক্ষার্থীরা গেলে চিকিৎসককে পাওয়া যায়না। এমন ঘটনা প্রায় ঘটে বলে জানান ভুক্তভোগী কয়েকজন শিক্ষার্থী।

অসুস্থ এক শিক্ষার্থী জানান, আজ সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে মেডিকেল সেন্টারে যান। প্রথমবার অনেক অসুস্থতা নিয়ে তিনি মেডিকেল সেন্টারে গেলে ‘স্যার একটু বাহিরে গিয়েছেন’ বলে জানান ওখানকার একজন স্টাফ এবং ১০ মিনিট পরে আসতে বলা হয়। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ২০ মিনিট পরে ১২টার দিকে গেলে তাকে জানানো হয়, ‘ডাক্তার সাহেব তো আসেনি, মেয়র আসবে, সেখানে গিয়েছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি গত কয়েকদিন গিয়েছি, ডাক্তারের দেখা পাইনি। প্রায় এমন ঘটনা ঘটে। আমরা গেলে ডাক্তার পাওয়া যায়না।

বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের এক শিক্ষার্থী বলেন, একদিন মেডিকেলে গিয়েছিলাম তখন বললো ডাক্তার নেই।অপেক্ষা করার পরেও আসলো না। আর একজন মহিলা ছিল, সে এমনভাবে আচরণ করলো, যেটা শোভনীয় মনে হয়নি।প্রবেশের সাথে সাথেই কী কাজ, কেন আসছেন, কী সমস্যা এমন কথা বলা শুরু করছে। মনে হচ্ছে আমি অপরাধ করে ফেলেছি। আমার এক বন্ধু রক্তচাপ মাপতে চাইছিল। তখন ওখানে বসা একজন মহিলা স্টাফ বললো মেপে নিতে। পরে দেখলাম মহিলা স্টাফ আরেকজনের সঙ্গে গল্প করতেছিল।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, মেডিকেল ও লাইব্রেরির স্টাফের আচারণ ভালো না। তাদের ভাব ও দাপট দেখলে বই নিতেও মন চায়না। কয়েকবার সরাসরি প্রতিবাদ করেছি, কোনো কাজ হয়না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নেই উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা। মাত্র তিন কক্ষ বিশিষ্ট এ চিকিৎসা কেন্দ্রে আছেন দুজন ডাক্তার, একজন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ও একজন নার্স। জরুরি প্রয়োজনে রোগী বহনের জন্য রয়েছে মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স। চিকিৎসাখাতে নেই পর্যাপ্ত বরাদ্দ। ফলে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক ও সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. মো. তানজীন হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি সকালে মেডিকেল সেন্টারে ছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রোগ্রাম থাকায় বেলা ১২টার পরে আমি প্রোগ্রামে আসি।এখানে ভিসি স্যারেরাও আছেন।’ দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নাহ! এমন কোনোদিন হয়নি। এই অভিযোগটি মিথ্যা। নামাজের সময় হয়তো কেউ আসলে ফিরে যান, কারণ সেসময় আমি নামাজে যাই।’

মেডিকেল সেন্টারের দায়িত্বরত চিকিৎসক ও সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. শাম্মী আরা নিপা মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি আজ একটু অসুস্থ ছিলাম। তারপরেও আমি এসেছি। তাছাড়া মেডিকেল সেন্টারে আমরা মাত্র দুজন চিকিৎসক আছি। তাই বিভিন্ন ট্রেনিং বা মিটিংয়ে থাকার কারণে কিছু সময়ে হয়তো সেখানে থাকতে হয়।’

এ বিষয়ে জানার জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনের কাছে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেননি।