অনিয়মের খোঁজ নিতে যাওয়া সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
সোমবার (২ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টায় ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অফিসে এ হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার নাম রোকনুজ্জামান রোকন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, ইনস্টিটিউটে মোট সাতজন কর্মকর্তা ও একজন কম্পিউটার অপারেটর ও একজন এমএলএসএস কর্মরত আছেন। সরোজমিনে গেলে, রবিবার অফিস শুরুর পর বেলা সাড়ে ৯টায় ও বিকেল ৩টায় একজন কর্মকর্তা ছাড়া বাকি কাউকে অফিসে পাওয়া যায়নি। পরের দিন সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় দুই-তিনজনকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। তবে তারা সাংবাদিকদের দেখে একত্রিত হয়ে চড়াও হন।
এ সময় কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান রোকন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলেন, “আপনারা এসব দেখা-শোনার কে? আপনারা যারা সাংবাদিক আছেন, তাদের এই রিসার্চ ইনস্টিটিউটে আসা নিষেধ। আপনাদের যা কিছু বলার আমাদের পরিচালক উপাচার্য স্যারকে বলবেন।”
তিনি আরো বলেন, “শিক্ষকরা দুই একটা ক্লাস নিয়ে সেমিস্টার শেষ করে দেয়। আপনারা এসব দেখেন না, আর আমাদের নিয়ে পড়ে আছেন। শিক্ষকেরা অনিয়ম, দুর্নীতি করে টাকা ভাগাভাগি করে- এগুলো আপনাদের চোখে পড়ে না? আপনারা শিক্ষা জীবন শেষ করে সাংবাদিকতা করতে আসবেন।”
এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্ব খেয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তিনি তার অন্যান্য সহকর্মীদের বলেন, “ডেইলি ক্যাম্পাসের সম্পাদকের নাম্বারটা বের করেন। আর শহরে সাংবাদিকদের সাথে আমাদের ভালো পরিচয় আছে।”
তিনি সাংবাদিকদের একজনকে জিজ্ঞেস করেন, “আপনি কোন পত্রিকায় কাজ করেন?” উত্তরে ওই সাংবাদিক নিজেকে ‘আমার দেশ পত্রিকা’র পরিচয় দিলে তিনি বলেন, “মাহমুদুর স্যারের সাথে আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “এ ইনস্টিটিউটের দুই-একজন বাদে কেউই নিয়মিত অফিস করেন না। এছাড়া তারা গবেষণায়ও মনোযোগী না। বেশিরভাগই ব্যক্তিগত কাজে সময় দেন।” অফিস ফাকি দেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, “প্রশাসন শক্তিশালী নয়। এটা মূলত প্রশাসনের বিষয়।” তবে সাংবাদিকদের চাকরি খাওয়ার হুমকি দেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।তবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, “কর্মকর্তা, কর্মচারীর বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিস না করার অভিযোগ আমরা এর আগেও পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য রেজিস্ট্রারকে দায়িত্ব দিতে হবে।”