ক্যাম্পাস

রাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে গবেষণা জালিয়াতির অভিযোগ সহকর্মীর

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে গবেষণা প্রবন্ধ জালিয়াতির অভিযোগ এনেছেন তারই এক সহকর্মী।

সহকর্মী হলেন, রাবির আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোরশেদুল ইসলাম। গত বছরের ২৪ নভেম্বরও সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

তবে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও জমা হয়নি প্রতিবেদন। ফলে প্রশাসনের এ নীরব ভূমিকার প্রতিবাদ জানিয়ে ফের সংবাদ সম্মেলন করেছেন অধ্যাপক মোরশেদুল।

সোমবার (২৬ মে) বিকেলে অধ্যাপক সাহাল উদ্দিনের আটটি গবেষণা প্রকাশনার সবকটিতেই জালিয়াতির অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করেন অধ্যাপক মোরশেদুল। এ সময় তিনি চৌর্যবৃত্তি যাচাইসংক্রান্ত প্রমাণপত্র হাজির করেন।

ড. সাহাল আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগে প্রেষণে কর্মরত আছেন এবং গত বছরের ১৭ নভেম্বর ওই বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এর আগে তিনি আইন বিভাগে অধ্যাপনা করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক মোরশেদুল ইসলাম বলেন, “আমি অধ্যাপক মো. সাহাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। তিনি সহকারী অধ্যাপক থাকাকালে তিনটি গবেষণা প্রকাশনা উপস্থাপন করেন, যার মধ্যে দুটি প্রকাশনাতেই জালিয়াতির প্রমাণ রয়েছে। একটি প্রকাশনায় ৫৬ শতাংশ এবং অপরটিতে ৮৫ শতাংশ জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী গবেষণার গুণমান ও সততার পরিপন্থি।”

তিনি বলেন, “অধ্যাপক সাহাল উদ্দিন সহকারী অধ্যাপক ও পরে অধ্যাপক পদে যেভাবে পদোন্নতি পেয়েছেন, তা সম্পূর্ণভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত। সহকারী অধ্যাপক হওয়ার সময় তিনি যে তিনটি গবেষণা প্রকাশ করেন, তার মধ্যে দুটি প্রকাশনায় যথাক্রমে ৫৬ শতাংশ ও ৮৫ শতাংশ প্লেজারিজমের প্রমাণ পাওয়া যায়।”

“পরে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির সময় তিনি ছয়টি গবেষণা প্রকাশ করেন, যার প্রতিটিতেই জালিয়াতি রয়েছে। এসব প্রকাশনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌর্যবৃত্তির পেইড সফটওয়্যারে বারবার যাচাই করে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ার পর বিষয়টি ২০২৪ সালের ১৪ নভেম্বর তারিখে লিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা আমলে না নিয়ে উল্টো অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিভাগের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়, যা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের ৬১, ৬২, ৬৩ ও ৬৪ ধারার সরাসরি লঙ্ঘন,” যুক্ত করেন অধ্যাপক মোরশেদুল।

অধ্যাপক মোরশেদুল বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ স্বাধীন দেশে এই ধরনের কার্যক্রম চলমান থাকলে তাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। জালিয়াতির বিষয়ে উপাচার্য বলেছেন ‘এটা নমিনাল কেজ’। প্রকাশনা জালিয়াতি যদি তুচ্ছ বিষয় হয়, তাহলে কেনো প্রতিটা বিভাগে প্রথম বর্ষ থেকেই গবেষণা করানো হয়?”