ক্যাম্পাস

কুবিতে র‍্যাগিংয়ের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্তদের পক্ষে মানববন্ধন, সাংবাদিকদের হেনস্তা

র‍্যাগিংয়ের দায়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ১৮তম আবর্তনের ১২জন শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। এ মানববন্ধনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে উপস্থিত সাংবাদিকদের হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।

রবিবার (২০ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে এ মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা।

এ সময় তারা ‘তুমি কে আমি কে, আঠারো আঠারো’, ‘আঠারো কেন মর্গে, বাকিরা কেন স্বর্গে’, ‘বাতিল বাতিল বাতিল চাই, বহিষ্কার বাতিল চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। 

এদিকে, মানববন্ধন শুরুর আগে সাংবাদিকদের গালিগালাজ ও হুমকি দেন গণিত বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের নাদিম রাহুল এবং বাংলা বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইউনুস আলী।

ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের এমসিজে নিউজের রিপোর্টার নিলয় সরকার বলেন, “গোলচত্ত্বরে আমরা সাংবাদিকরা নিউজ কাভারের উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন ১৮তম আবর্তনের গণিত বিভাগের একজন শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তোরা লাইনে দাঁড়াস না কেন?’ তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘আপনি কাদের বলছেন?’ তিনি বললেন, ‘তোদেরকে বলছি।’ আমরা সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি বলেন, ‘বলছি তো কি হইছে?’”

তিনি বলেন, “তার কাছে সব সাংবাদিক এমন আচরণের কারণ জানতে চাইলে ১৮তম আবর্তনের বাংলা বিভাগের ঈউনুস সাংবাদিকদের এক পর্যায়ে বলেন, ‘বালপাকনামি করতে আসছে? তুই কে?’ বলে আক্রমণাত্বকভাবে মারতে আসে, যা সাংবাদিকদের পেশাদারিত্বকে হুমকির মুখে ফেলে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ ইউনুস আলী বলেন, “আমি মানববন্ধনে গিয়েছিলাম যাতে আমার সহপাঠীদের বহিষ্কারের শাস্তি মওকুফ করা যায়। সেখানে নাদিমের সঙ্গে সাংবাদিক ভাইদের ঝামেলা দেখে আমি থামাতে যাই এবং আমার বন্ধুদের গালি দিয়ে সরিয়ে আনার চেষ্টা করি। কিন্তু সাংবাদিক ভাই মনে করেছেন তাকে গালি দিয়েছি। পুরো বিষয়টা ভুল বোঝাবুঝি।”

মানববন্ধনে মার্কেটিং বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকিব জামান বলেন, “আমাদের বিভাগের থাপ্পড়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আর দুই ব্যাচের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে, তার কোনো লিখিত অভিযোগও দেওয়া হয়নি। একটি ছেলেকে ক্লাসে ঢোকার সময় একজন শার্টের হাতা নামাতে বলেছিল, পরে জানা যায় সে ডায়ালাইসিস রোগী ছিল। আমরা বিষয়টি জানতাম না। এ ঘটনায় আমাদের দায় স্বীকার করছি। প্রশাসন যেন বিষয়টি মানবিকভাবে বিবেচনা করে, সে জন্যই আমরা দাঁড়িয়েছি।”

সাংবাদিকদের মারধরের চেষ্টার ব্যাপারে তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণ করা ভুল হয়েছে। এজন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।”

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, “আমি এ ব্যাপারে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিব।”

গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) মার্কেটিং বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের সাতজন এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের পাঁচজন শিক্ষার্থীকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া, বহিষ্কৃত ১২ জন আজীবন আবাসিক হলে অবস্থান করতে পারবেন না বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।