ক্যাম্পাস

চাকসু নির্বাচন নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন ও ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে শাখা ছাত্রদল।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর আড়াইটায় চাকসু ভবনের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে লিখিত বক্তব্যে শাখা ছাত্রদল সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন বলেন, “চাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুইবার ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল সব ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছিল। সর্বশেষ বৈঠকে উপ-উপাচার্য, ছাত্র উপদেষ্টা, চাকসুর পরিচালক, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সব ছাত্র সংগঠনের সম্মতিক্রমে হ্যাঁ/না ভোটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল।”

তিনি বলেন, “সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে বলা হয়েছিল যে চাকসুর প্রার্থীতার ক্ষেত্রে নিয়মিত স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাই প্রার্থী হতে পারবে। কিন্তু পরবর্তীতে সংশোধিত গঠনতন্ত্রে দেখা যায়, এমফিল-পিএইচডি কোর্সের শিক্ষার্থীদেরও চাকসুতে ভোটার ও প্রার্থীতার সুযোগ দিয়েছে। এছাড়া বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩০ নির্ধারণ করা হয়ে। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত তাদের পূর্ব প্রতিশ্রুতির ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। আমরা এ সিদ্ধান্ত বাতিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “সংশোধিত গঠনতন্ত্রে দপ্তর সম্পাদক পদটি শুধু পুরুষ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। যেটি নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যপূর্ণ এবং তাদের ক্ষমতায়নের পরিপন্থি। শিক্ষার্থীদের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, দপ্তর সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ চবি প্রশাসন কেনো কেবল পুরুষ শিক্ষার্থীর জন্য সংরক্ষিত রাখল এবং ওই পদে নারীদের কেনো তারা যোগ্য মনে করছে না? সিদ্ধান্তটি পুনঃবিবেচনা করার জন্য প্রশাসনের কাছে ছাত্রদল আবারো দাবি জানাচ্ছে।”

আলাউদ্দিন মহসিন বলেন, “চবিতে খাবার ও খাবারের পরিবেশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ নিত্যদিনের। অস্বাস্থ্যকর খাবার নিয়ে শিক্ষার্থীরা সমালোচনা প্রশাসন বরাবরই গুরুত্ব সহকারে আমলে নেয় না। যেহেতু চাকসু শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করবে, তাই গঠনতন্ত্রের ধারা-১২ এ স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদকের কার্যপরিধির মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি সংযুক্ত করা যেতে পারে।”

আলাউদ্দিন মহসিন আরো বলেন, “চাকসুর গঠনতন্ত্রের ধারা-১০ এ নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত সুস্পষ্ট রোডম্যাপ নেই। কোন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে এবং তাদের কার্যপরিধি নিয়েও স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। ইতোমধ্যে তফসিল ঘোষণা করা জাকসু ও রাকসুর গঠনতন্ত্রে এ বিষয়ে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। ভোট কেন্দ্রের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী এক হলে বরাদ্দকৃত এবং আরেক হলে সংযুক্ত হলে সেই শিক্ষার্থী কোন হলে ভোট প্রদান করবেন, সেটিও এই ধারায় স্পষ্ট বলা হয়নি। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে চবি ছাত্রদলের দাবি হলো ভোট কেন্দ্রগুলো অনুষদে স্থানান্তর করা হোক।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয়ে এই ছাত্রদল নেতা বলেন, “৫ আগস্টের পর থেকে একটি গোষ্ঠীর ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণ, হলে মিল পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে তাদের আধিপত্য বিস্তার, মব সৃষ্টি, নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রশাসনের বিমাতাসুলভ আচরণ, গুপ্ত হামলায় প্রশাসনের নিরবতা, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলের দোষী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের শাস্তি প্রদানে অনিহা ইত্যাদি বিষয় পরিলক্ষিত হয়েছে।”

এ সময় অন্যদের মাঝে শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াছিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।