ক্যাম্পাস

কুবিতে র‍্যাগিংয়ের দায়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ১৯ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও শোকজের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে এ দাবিতে মানববন্ধন করেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘বহিষ্কার কেনো হলো, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ভিত্তিহীন বহিষ্কার, মানি না মানব না’, ‘লঘু দোষে গুরুদণ্ড, মানি না মানব না’, ‘অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত, মানি না মানব না’ বলে স্লোগান দেন।

মানববন্ধনে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত একপাক্ষিক ও ভিত্তিহীন। ভুক্তভোগী ও জুনিয়ররা জানিয়েছে, কোনো র‍্যাগিং হয়নি। আগামী রবিবারের (২৪ আগস্ট) মধ্যে বহিষ্কার ও শোকজ আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যত্থায় কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।

বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান সিফাত বলেন, “সেদিন আমরা জুনিয়রদের ক্লাসে শুধু খেলার ব্যাপারে কথা বলতে গিয়েছিলাম। স্যাররা সেটিকে র‍্যাগিং ভেবে ভুল করেছেন। কিন্তু জুনিয়ররা নিজেরাও স্বীকার করেছে যে, তারা কোনো র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়নি।”

তিনি বলেন, “ভিক্টিম নিজে ও তার অভিভাবক গণমাধ্যমে স্পষ্ট জানিয়েছে, র‍্যাগিং হয়নি। এরপরও যে অভিযোগের ভিত্তিতে বহিষ্কার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, অযৌক্তিক ও মিথ্যা। আমরা এমন অন্যায় বহিষ্কার মেনে নেব না।”

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাসেল মিয়া বলেন, “১৮তম আবর্তনের একজন ছেলে ও একজন মেয়েকে ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে বহিষ্কার করা হয়েছে। অভিযোগ আনা হয়েছিল যে, তারা ১৯তম আবর্তনের একজন শিক্ষার্থীকে নাচতে বাধ্য করেছে। অথচ বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায়, কারণ তাদের একটি নাচের প্রোগ্রাম ছিল।”

তিনি বলেন, “একজন শিক্ষার্থী ব্যক্তিগত কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গেছে এবং তার বাবাও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এরপরও প্রশাসন এমন অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে জবাব চাই, কেন তাদের বহিষ্কার করা হলো?”

তিনি আরও বলেন, “বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা কখনোই ১৯তম ব্যাচের ক্লাসে যায়নি, শুধু অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে উপস্থিত ছিল। এ অবস্থায় ‘তারা কেন ১৯তম ব্যাচের ক্লাসে গেল’- এই প্রশ্নে প্রশাসনের আগে জাস্টিফিকেশন দেওয়া উচিত ছিল। যদি তদন্ত হয়, তবে পুরো বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে হবে। একপাক্ষিক অভিযোগের ভিত্তিতে বহিষ্কারাদেশ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

গত ২ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের দ্বারা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীরা নিয়মিত র‍্যাগিংয়ের শিকার হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ১৬ জুলাই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রক্টরিয়াল বডি র‍্যাগিং চলাকালে অবস্থায় হাতেনাতে অভিযুক্তদের আটক করে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর গত ১৪ আগস্ট শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশ অনুসারে বিভাগটির ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও ১৭ শিক্ষার্থীকে শোকজ দেওয়া হয়।