ক্যাম্পাস

চবিতে সংঘর্ষের ঘটনায় জরুরি সিন্ডিকেটের ১৩ সিদ্ধান্ত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ৫৬৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মোট ১৩টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

সিদ্ধান্তগুলো হলো- শনিবার ও রবিবার (৩১ আগস্ট, ১ সেপ্টেম্বর), বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উপর স্থানীয় দুস্কৃতিকারী কর্তৃক হামলার তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহানুভূতি জ্ঞাপন; আহত সব শিক্ষার্থীর উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা ও ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বহন করার সিদ্ধান্ত; উদ্ভুত ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের একটি তালিকা প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত; সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানের স্বার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি মডেল থানা স্থাপন, রেলগেটে নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাটল ট্রেনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

অন্য সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, যেসব ভবন/কটেজে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বসবাস করে, সেগুলোর মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের ঘরভাড়াসহ অন্যান্য সমস্যাজনিত অসন্তোষ নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ; বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুইটি অ্যাম্বুলেন্স ক্রয় ও ৫০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে রূপান্তরের জন্য ডিপিপি প্রণয়ন করে সরকারের নিকট দাখিল; বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার লক্ষ্যে ১০তলা বিশিষ্ট পাঁচটি ছাত্র হল এবং পাঁচটি ছাত্রী হল নির্মাণের লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডিপিপি প্রস্তুত করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাখিল; বিদ্যমান আবাসিক হলগুলো সংস্কার করে শিক্ষার্থীদের বসবাস উপযোগী করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বিদ্যমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন রাখার ও টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো; ৩০ ও ৩১ আগস্ট সংঘটিত ঘটনা তদন্ত করে এর কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণসহ দোষীদের চিহ্নিত করার জন্য একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে অনুরোধ জানানো; শনিবার ও রবিবার সংঘটিত ঘটনা তদন্ত করে এর কারণ অনুসন্ধান, দোষীদের চিহ্নিতকরণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিম্নরূপে একটি কমিটি গঠন করে।

কমিটিতে রয়েছেন, আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরী (ডিন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ), সদস্য সচিব সৈয়দ ফজলুল করিম (ডেপুটি রেজিস্ট্রার, প্রশাসন, গোপনীয় শাখা), সদস্য অধ্যাপক ড. রেজাউল আজিম (পদার্থবিদ্যা বিভাগ), অধ্যাপক ড. সৈয়দ মুহাম্মদ শামসুল হুদা (ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স), অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমান উল্লাহ (প্রশাসক, নিরাপত্তা দপ্তর), সাইদ বিন কামাল চৌধুরী (সহকারী প্রক্টর), তাহমিদা খানম, (সহকারী পরিচালক, ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা)।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে মতবিনিময় সভা এবং উদ্ভুত ঘটনায় স্থানীয় নিরীহ মানুষের সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে তা পূরণের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানানো এবং এ কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের সঙ্গে সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।