ক্যাম্পাস

জাকসু নির্বাচন: হাতে গোনা হচ্ছে ভোট, ফল দিতে দুপুরও হতে পারে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গণনা শেষ করে ফলাফল দিতে শুক্রবার দুপুরও হয়ে যেতে পারে। 

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত। ভোট গ্রহণ শেষে ২১টি হল থেকে ব্যালট বাক্সগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে নেওয়া হয়েছে। এখন চলছে গণনা।

ফলাফল নিয়ে জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব বলেন, “ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে (হাতে গোনা হচ্ছে) ভোট গণনা করা হবে। ফলাফল পেতে আগামীকাল (শুক্রবার) দুপুর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মোকাবিলায় ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্তত দেড় হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।”

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১টি আবাসিক হল। জাকসুর নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য অনুযায, শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে প্রতিটি হলকে কেন্দ্র করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে একাধিক বুধ স্থাপন করে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে।

একনজরে দেখে নেওয়া যাক, কোন হলে কত শতাংশ ভোট পড়েছে।

আলবেরুনী হলে মোট ২১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১২৫ জন, ভোট পড়েছে ৫৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। 

আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের মোট ৩৩৩ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২১৬ জন, ভোট পড়েছে ৬৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। 

মীর মশাররফ হোসেন হলের মোট ভোটার ৪৬৪ জন, ভোটা দিয়েছেন ৩১০ জন। এই হলে ৬৬ দশমিক ৮১ শতাংশ ভোট পড়েছে।

নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে মোট ভোটার ২৮০, ভোট পড়েছে ১৩৮টি। ভোটদানের হার ৪৯ দশমিক ২৯। এই হলে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে।

শহীদ সালাম-বরকত হলে ২৯৯ জনের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২২৪ জন। এখানে ভোট পড়েছে ৭৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। 

মওলানা ভাসানী হলে ৫১৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৮৪ জন ভোট দিয়েছেন, অংশগ্রহণের হার ৭৪ দশমিক ৭১ শতাংশ।

জাহানারা ইমাম হলে ৩৬৭ জনের মধ্যে ২৪৭ জন ভোট দিয়েছেন, ভোট পড়েছে ৬৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। 

প্রীতিলতা হলে ৩৯৯ ভোটারের মধ্যে ২৫০ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন, ভোট পড়েছে ৬২ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

বেগম খালেদা জিয়া হলে ৪০৯ জনের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২৪৯, অংশগ্রহণ করেছেন ৬০ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

১০ নং (ছাত্র) হলে ৫২২ ভোটারের মধ্যে ৩৮১ জন ভোট দিয়েছেন। ভোটে অংশ নিয়েছেন ৭২ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

শহীদ রফিক-জব্বার হলে ৬৫১ জনের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৪৭০ জন, অর্থাৎ ৭২ দশমিক ২০ শতাংশ। 

বেগম সুফিয়া কামাল হলের ৪৫৬ ভোটারের মধ্যে মাত্র ২৪৬ জন ভোট দিয়েছেন, অর্থাৎ ৫৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

১৩ নম্বর ছাত্রী হলে ৫১৯ জনের মধ্যে ২৯২ জন ভোট দিয়েছেন, অর্থাৎ ৫৬ দশমিক ২৬ শতাংশ। 

১৫ নম্বর ছাত্রী হলে ৫৭১ ভোটারের মধ্যে ৩৫০ জন ভোট দিয়েছেন, অর্থাৎ গৃহীত ভোট ৬১ দশমিক ৩০ শতাংশ।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ৩৫০ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ২৬১টি, অংশগ্রহণ ৭৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

রোকেয়া হলে ৯৫৫ জনের মধ্যে ৬৮০ জন ভোট দিয়েছেন, অংশগ্রহণ ৭১ দশমিক ২০ শতাংশ। 

ফজিলতুন্নেসা হলে ৮০৩ ভোটারের মধ্যে ৪৮৯ জন ভোট দিয়েছেন, অর্থাৎ গৃহীত ভোট ৬০ দশমিক ৯০ শতাংশ।

বীরপ্রতীক তারামন বিবি হলের ৯৮৪ জনের মধ্যে ৫৯৫ জন ভোট দিয়েছেন, অংশগ্রহণ ৬০ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

২১ নম্বর ছাত্র হলে ৭৩৫ ভোটারের মধ্যে ৫৬০ জন ভোট দিয়েছেন, অংশগ্রহণ ৭৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। 

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে সর্বাধিক অংশগ্রহণ দেখা গেছে। ৯৯১ জনের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৮০৭ জন, ভোট পড়েছে ৮১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। 

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলে ৯৪৭ জনের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৭৫২ জন, অংশগ্রহণ ৭৯ দশমিক ৪১ শতাংশ।

কাজী নজরুল ইসলাম হলের পর সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলে (৭৯ দশমিক ৪১ শতাংশ) এবং ২১ নম্বর ছাত্র হলে ৭৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ৪৯ দশমিক ২৯ শতাংশ।

দীর্ঘ ৩৩ বছর পর দশমবারের মতো জাকসু নির্বাচন হলো। এবার নির্বাচনে জাকসুর ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৭৭ প্রার্থী। নির্বাচনে বামপন্থি, শিবির, ছাত্রদল ও স্বতন্ত্র শিক্ষার্থীদের সমর্থিত আটটি প্যানেল নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার মধ্যাহ্নের পর থেকে ভোট জালিয়াতি, কারচুপি ও ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অভিযোগ আসতে থাকে। এসব অভিযোগ তুলে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলসহ পাঁচটি প্যানেল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে পুননির্বাচনের দাবি করেছে। তবে জাকসুর নির্বাচন কমিশন এই দাবি পক্ষে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। ভোট গণনার প্রক্রিয়ায় রয়েছে তারা।