ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অবশেষে শিক্ষার্থীদের সনদ, নম্বরপত্র, ট্রান্সক্রিপ্ট ও সত্যায়নপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের পুরনো প্রক্রিয়া থেকে সরে এসে আধুনিকায়নের পথে হাঁটছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সম্প্রতি service.du.ac.bd লিংক চালু করা হয়েছে, যেখানে একাডেমিক ই-মেল ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই এসব সেবার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
শিক্ষার্থীরা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে না গিয়েই নতুন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তাদের চাহিদামতো ডকুমেন্টসের অনুরোধ করতে পারবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় তা শিক্ষার্থীদের দেওয়া ঠিকানায় পাঠাবে। একইসঙ্গে আবেদনকৃত ডকুমেন্ট প্রস্তুতির অগ্রগতিও অনলাইনে দেখা যাবে।
আইসিটি সেলের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফল ডিজিটাল রূপে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তবে, বিবিএ ও আইবিএ প্রোগ্রামের ফলাফল প্রক্রিয়াজনিত বিলম্বের কারণে তাদের সব তথ্য এখনো ডিজিটালাইজ করা সম্ভব হয়নি। খুব দ্রুতই আরো পাঁচ বছরের ফলাফল ডেটা সিস্টেমে যুক্ত করা হবে।
আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোসাদ্দেক আলী কামাল তুষার রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “সম্প্রতি পাস করা শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা ২০১৬ সাল পর্যন্ত ডেটা ডিজিটালাইজ করেছি। সার্টিফিকেট গ্রহণের সময় শিক্ষার্থীদের হলে কোনো বকেয়া টাকা আছে কি না, তা অনলাইনেই হল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যাচাই করা হবে। টাকা বকেয়া থাকলে শিক্ষার্থীকে অনলাইনেই জমা দিতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “এই প্রযুক্তি বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত কোনো ব্যয় হয়নি। আমরা নিজেরাই আমাদের রুটিন দায়িত্বে এটি সম্পন্ন করেছি। যে শিক্ষার্থী অনলাইনে আবেদন করবেন, সেই শিক্ষার্থীর নিজস্ব হলে অনলাইনের মাধ্যমেই নোটিফিকেশন পাঠানো হবে এবং জানতে চাওয়া হবে, ওই হলে তার কোনো টাকা বকেয়া আছে কি না? বকেয়া থাকলে তাকে অনলাইনে হলের টাকা পরিশোধ করতে হবে।”
পরিচালক বলেন, “বর্তমানে সেবাটি ট্রায়ালে আছে; অতি দ্রুত আমরা এটি অফিসিয়ালি উন্মুক্ত করব। প্রযুক্তিতে কিছু সমস্যা আছে। শিক্ষার্থীরা যত ব্যবহার করছেন ততই আমরা সমস্যাগুলো পাচ্ছি, সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি। পূর্ণাঙ্গভাবে উন্মুক্ত করার পর আরো উন্নতভাবে সমস্যাগুলো শনাক্ত করতে পারব।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. হিমাদ্রি শেখর চৌধুরী জানান, অনলাইনে আবেদন করতে কত টাকা ফি দিতে হবে, এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়েমা হক বিদিশা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো কাগজপত্রগুলো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি সম্পন্ন হলে বাকি সব ডকুমেন্টসও ধাপে ধাপে ডিজিটালাইজ করা হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের সময়, খরচ ও ভোগান্তি কমানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।