ক্যাম্পাস

বিচারহীনতার বিরুদ্ধে রাজপথে জাবি: হাদিকে নিয়ে ফের মিছিল

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের বিচারহীনতার প্রতিবাদে এবং খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ফের রাজপথে নেমেছে শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বটতলায় এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম নাঈমের সঞ্চালনায় বিভিন্ন শিক্ষার্থী বক্তব্য রাখেন।

মিছিল চলাকালে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই মরলো কেন, ইন্টেরিম জবাব চাই’, ‘আমরা সবাই হাদি হবো, গুলির মুখে কথা কবো’, ‘হাদি হত্যার বিচার চাই’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘মুজিববাদ মুজিববাদ, মুর্দাবাদ মুর্দাবাদ’সহ রাষ্ট্র ও ক্ষমতাকাঠামো বিরোধী স্লোগানে প্রকম্পিত করে তোলে ক্যাম্পাস।

সমাবেশে আ ফ ম কামালউদ্দিন হল সংসদের জিএস আবরার শাহরিয়ার বলেন, “আমরা নিজেদের রক্ত দিয়ে যে সরকারকে প্রতিষ্ঠিত করেছি, সেই সরকার আজ বিপ্লবীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। বিপ্লবীদের খুনিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে, এটাই বর্তমান বাস্তবতা।”

তিনি আরো বলেন, “হাদি হত্যার বিচার বিলম্ব মানেই বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই—অতি দ্রুত এই হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সিয়াম ইত্তেসাম বলেন, “হাদি কোনো ব্যক্তির নাম নয়, হাদি একটি রাজনৈতিক চেতনা। তিনি ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এক সংগ্রামী কণ্ঠস্বর। হাদি হত্যার এতদিন পেরিয়ে গেলেও বিচার প্রক্রিয়ায় কার্যকর অগ্রগতি নেই। এটি স্পষ্টভাবে ইন্টেরিম সরকারের রাজনৈতিক ব্যর্থতা।”

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল সংসদের ভিপি মো. সিফাতুল্লাহ বলেন, “সরকারের নীরবতা ও উদাসীনতা বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে আরো গভীর করছে। হাদির জানাজায় যে লাখো মানুষ অংশ নিয়েছিল, তাদের প্রত্যেকের দাবি একটাই; হাদি হত্যার বিচার।”

আমরা সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, এই বিচার আর বিলম্বিত হলে আন্দোলন আরো বিস্তৃত হবে, বলেও জানান তিনি।

সমাপনী বক্তব্যে জাকসুর শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক আবু ওবায়দা ওসামা বলেন, “হাদি হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন থামবে না। অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে নির্বাচনী প্রচারণা শেষে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। ৭ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।