যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের সংবেদনশীল তথ্য পাচারের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মিজানুর রহমানের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেন তাকে চাকরি থেকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে না, তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর (শো-কজ) নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে তথ্য পাচার সংক্রান্ত অভিযোগ করেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তর। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ৩১ আগস্ট ২০২৫ তারিখে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের অফিস সহকারী মোঃ আশরাফুল ইসলামের সাথে যোগসাজশে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ঐ দপ্তরের গোপনীয় নথি সংগ্রহ করার অভিযোগটি তদন্তে সত্য বলে প্রমাণিত হয়; যা চাকরির শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং শিষ্টাচার বর্হিভূত কর্মকাণ্ড।
দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পাচার করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সংবদ্ধ চক্র। অভিযুক্তরা সেই চক্রেরই অংশ বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে কারণ দর্শানোর নোটিশের পর থেকে অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
রিজেন্ট বোর্ড সূত্র জানায়, তথ্য পাচার সংক্রান্ত কার্যকলাপ যবিপ্রবির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সাধারণ আচরণ, শৃঙ্খলা ও আপিল সংক্রান্ত বিধি-২ (ঘ), বিধি-৩ (১) (খ) এর লঙ্ঘন অনুযায়ী এবং গত ০৩/১২/২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডের ১১০তম সভার সিদ্ধান্ত-১১০/৪০ (ক) মোতাবেক প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ও অফিস সহকারি আশরাফুল ইসলামকে সাধারণ আচরণ, শৃঙ্খলা ও আপীল সংক্রান্ত বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। একই সাথে বিধি ৫ (ঝ) ও ৫ (ঠ) অনুযায়ী শাস্তি আরোপের ভিত্তি থাকায় বিভাগীয় কার্যধারার অংশ হিসেবে অভিযুক্তদের অভিযোগনামা প্রেরণ করা হয়েছে। একই বিধির বিধি ৬ (৩) (ঘ) মোতাবেক কেনো তাদেরকে 'চাকুরী হইতে বরখাস্তকরণ (Dismissal) করা হবে ন’, তা আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ আহসান হাবীব বলেন, “তদন্তে সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে শোকজ করা হয়েছে। পরবর্তীতে তার বক্তব্য অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তরা সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”