চ্যাম্পিয়নস ট্রফি-২০১৭

ফিরে দেখা : চ্যাম্পিয়নস ট্রফি-২০০৬

শামীম পাটোয়ারী : জমজমাট চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ময়দানি লড়াই শুরু হতে বাকি আর দুই দিন। মূলপর্বের লড়াই শুরুর আগেই নিজেদের পরখ করে নিতে ব্যস্ত অংশগ্রহণকারী দলগুলো। ব্যাট-বলের মূল লড়াই শুরুর আগে চলুন ফিরে দেখা যাক কেমন ছিল ২০০৬ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আসর। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি-২০০৬ : চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নামকরণ হওয়ার পর ২০০৬ সালে প্রথমবার খেলার সুযোগ হয়েছিল বাংলাদেশের। তবে সেবার সরাসরি মূলপর্বে খেলতে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দিতে হয়েছিল যোগ্যতার পরীক্ষা। বাছাইয়ের তিন ম্যাচের দুটিতে হেরে বিদায় নিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই হিসেবে এবারই প্রথম সরাসরি মূলপর্বে খেলছে সাকিব-তামিম-মুশফিকরা। এবার আর বাছাইয়ের পরীক্ষা নয়। র‌্যাঙ্কিং যুদ্ধে জয়ী হয়ে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলকে পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০১৭ এর মূলপর্বে জায়গা করে নিয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার বাংলাদেশ। পহেলা জুন স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াই দিয়েই বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দৌড় শুরু হবে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০০৬ এর আসর বসেছিল ভারতে। প্রতিবেশি দেশটিতে ৫ নভেম্বর, ২০০৬ তারিখে শুরু হয় এর লড়াই। ১ এপ্রিল, ২০০৬ তারিখে আইসিসি ওডিআই চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষ ছয় দল এবং শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার চার টেস্টভূক্ত দল থেকে রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে উঠে আসা ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং শ্রীলঙ্কাকে মূলপর্বে ‍যুক্ত করা হয়। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০০৬ সালে চ্যাম্পিয়নস হয় অস্ট্রেলিয়া। পুরো টুর্নামেন্টে কেবল একটি ম্যাচ হেরেছিল দারুণ ফর্মে থাকা অসিরা। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সেবারই প্রথম শিরোপার স্বাদ পায় অস্ট্রেলিয়া। গ্রপ পর্বে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল ম্যাচে অসিদের বিপক্ষে ডার্কওয়ার্থ-লুই পদ্ধতিতে ৮ উইকেটে হারে ক্যারিবীয়রা। ভারতে অনুষ্ঠিত ওই আসরে ব্যাট হাতে সবচেয়ে বেশি রান করেছিলেন ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইল। দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্যে একাই ৪৭৪ রান করেছিলেন গেইল। বল হাতেও সর্বোচ্চ উইকেটের দখল ছিল আরেক ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকার। জেরমে টেলর ১৩টি উইকেট নিয়ে শীর্ষ স্থানে ছিলেন। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০০৬ সালে অংশ নেয় মোট ১০টি দল। ১ এপ্রিল, ২০০৬ তারিখের আইসিসি ওডিআই চ্যাম্পিয়নশীপ অনুযায়ী দলগুলোর অবস্থান নির্ধারিত হয়েছিল। ২৩ মার্চ, ২০০৬ তারিখে কেনিয়াকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ ১০ম স্থানে এসে প্রতিযোগিতায় লড়াই করার যোগ্যতা অর্জন করে। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, ভারত ও ইংল্যান্ড - এ শীর্ষ ছয় দল স্বয়ংক্রিয়ভাবে যোগ্যতা লাভ করে। শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশকে ৭ থেকে ১৪ অক্টোবর দেয় বাছাইয়ের পরীক্ষা। আট দলকে দুই গ্রুপে বিভক্ত করে রাউন্ড-রবিন প্রতিযোগিতায় খেলা হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেমি-ফাইনালে হারায়। শিরোপা নির্ধারণী চূড়ান্ত ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জয় করে রিকি পন্টিংয়ের দল। ৭ অক্টোবর ২০০৬ মোহালীতে বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৩৭ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। ১১ অক্টোবর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ হারে ১০ ‍উইকেটে। এরপর ১৩ অক্টোবর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০১ রানে জয় পায় টাইগাররা। তিন ম্যাচের দুটিতে হারায় বাছাইপর্বে তৃতীয় স্থানে থাকায় আসর থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। এক নজরে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি- ২০০৬ তারিখ : ৭ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর ২০০৬ আয়োজক : ভারত ফরম্যাট : ওয়ানডে ইন্টারন্যাশনাল টুর্নামেন্ট : রাউন্ড-রবিন অংশগ্রহণকারী দেশ : ১০টি চ্যাম্পিয়ন : অস্ট্রেলিয়া সবচেয়ে বেশি রান : ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিজ গেইল (৪৭৪) সবচেয়ে বেশি উইকেট : ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেরমে টেলর (১৩) ।

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ মে ২০১৭/শামীম/আমিনুল