অর্থনীতি

বেসরকারি খাতে আরো এক অর্থনৈতিক অঞ্চলকে লাইসেন্স

নিজস্ব প্রতিবেদক : বেসরকারি খাতে আরও একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে লাইসেন্স দিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই লাইসেন্স প্রদান করে  বেজা । এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) পবন চৌধুরী। প্রি-কোয়ালিফিকেশনের শর্ত পূরণ করায় আমান অর্থনৈতিক অঞ্চলকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে তিনি জানান। এ সময় বেজার নির্বাহী সদস্য ড. এম এমদাদুল হক, মো. হারুনুর রশিদ, হরিপ্রসাদ পাল ও বেজা নির্বাহী বোর্ডের সচিব মোহাম্মদ আইয়ুব, আমান গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম, পরিচালক মো. তরিকুল ইসলাম, পরামর্শক মেজর জেনারেল শেখ আমান ও অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে পবন চৌধুরী বলেন, ‘প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্সের সমস্ত শর্ত পূরণ করে দ্রুত প্রাইভেট অর্থনৈতিক অঞ্চলের লাইসেন্স পেল আমান ইকোনমিক জোন লিমিটেড। এর মধ্য দিয়ে বেজা ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন ও ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থানের আরো একটি মাইলফলক স্পর্শ করলো।’ আমান ইকোনমিক জোন লিমিটেড দ্রুত উৎপাদনে যেতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, আগামী ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বেজা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এরই ধারবাহিকতায় বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের লাইসেন্স প্রদান করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, রূপকল্প-২০২১ সালের মধ্যে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় এবং ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রত্যাশা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেজা স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানকে ১৩টি প্রাইভেট অর্থনৈতিক অঞ্চল করার প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স প্রদান করেছে এবং ২টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে লাইসেন্স দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমান অর্থনৈতিক অঞ্চলকেও লাইসেন্স প্রদান করা হয়। আমান ইকোনমিক জোন লিমিটেড বাংলাদেশের আমান গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। এটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মেঘনা নদীর তীর ঘেঁসে  হারিয়া, সোনামোহি, বোদ্ধের বাজার মৌজার, সোনারগাঁও উপজেলার নারায়ণগঞ্জে ৮৩ একর জমির উপর অবস্থিত। আমান ইকোনমিক জোন দেশের সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তথা শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও জিডিপি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার উদ্দেশ্যে গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়। ইতোমধ্যে আমান ইকোনমিক জোনের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নমূলক কাজ সম্পাদন হয়ে আসছে। সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও মাটি ভরাটের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এই জোনে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে এবং এ বছরের মাঝামাঝি প্রায় ৩০৭ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত আমান সিমেন্ট, আমান প্যাকেজিং লিমিটেড ও আমান শিপ বিল্ডিং-এর পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা যাবে বলে আশা করছে বেজা। এই ইকোনমিক জোনে বিদ্যুং সংযোগ রয়েছে, তিতাস থেকে সরবরাহকৃত গ্যাস সংযোগসহ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সমস্ত সর্বাধুনিক আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা করা হচ্ছে যা ইকোনমিক জোন থেকে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের সরবরাহ করা হবে। এর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পানি শোধনাগার প্ল্যান্ট, নোংরা পানি অপসারণ, তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার প্ল্যান্ট, কঠিন বর্জ্য অপসারণ, অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থাপনাসহ সকল পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা থাকবে। প্রস্তাবিত শিল্পখাত সমূহের মধ্যে ফুড ও বেভারেজ, শিপ বিল্ডিং, সিমেন্ট, এলপিজি ইত্যাদি রয়েছে। ১ম বছর থেকে দক্ষ-অদক্ষ, নারী-পুরুষ মিলিয়ে মোট ৩ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে যা ৫ বছরের মধ্যে ২০ হাজারের অধিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ মার্চ ২০১৭/আশরাফ/শাহনেওয়াজ