অর্থনীতি

বিসিআইসির ডিলারদের মাধ্যমে সার বিতরণের দাবি

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) ডিলারদের মাধ্যমে ইউরিয়াসহ সব ধরনের সার বিতরণের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) নেতারা। শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে বিএফএর ২৩তম বার্ষিক সাধারণ সভায় সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। বিএফএর নেতারা বলেছেন, ‘বিএফএর সদস্যভুক্ত প্রত্যেক ডিলার ২ লাখ টাকা জামানত দিয়ে ১৯৯৫ সাল থেকে চাষি পর্যায়ে সুষ্ঠুভাবে সার সরবরাহের দায়িত্ব পালন করছে। সার ব্যবস্থাপনায় তাদের এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বিএডিসিসহ সরকারিভাবে আমদানি করা নন-ইউরিয়া সারও কৃষকদের মাঝে সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করা সম্ভব।’ বিএফএর নেতারা জানান, বর্তমানে বিসিআইসি নিযুক্ত ৫ হাজার ৩০০ ডিলার ও ৪৫ হাজার খুচরা বিক্রেতা দেশব্যাপী সারের সুষ্ঠু সরবরাহ ও বিতরণের দায়িত্ব পালন করছে। এর ফলে দেশে বিভিন্ন ফসলের বাম্পার ফলন হচ্ছে। এলাকাভিত্তিক চাহিদা অনুযায়ী মোটা ও চিকন দানার ইউরিয়া সার সরবরাহ এবং বর্তমানে চাষি পর্যায়ে সারের চাহিদা কম থাকায় চলতি বছরের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত সার উত্তোলন ঐচ্ছিক করার দাবি জানান তারা। এ সময় শিল্পমন্ত্রী সার ডিলারদের ব্যবসাকে একটি পবিত্র ব্যবসা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এ ব্যবসার সাথে মানবসেবার বিষয়টি জড়িত। দেশের ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য সংস্থানে সারের ডিলাররা পবিত্র দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের নামে এবং ২০১৫ সালে বিএনপি-জামাতের মাসব্যাপী আগুনসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের মধ্যেও চাষি পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন সার সরবরাহ করায় ডিলারদের ধন্যবাদও জানান তিনি। আমির হোসেন আমু বলেন, জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার সার খাতে বিপুল পরিমাণে ভর্তুকি দিচ্ছে। এ খাতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩ হাজার ২৮১ কোটি ৭২ লাখ এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২ হাজার ২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। জাতীয় স্বার্থে ভর্তুকির এ ইতিবাচক উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। শিল্পমন্ত্রী দাবি করেন, একসময় সার দাবি করায় ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ৮ বছরে দেশের কোথাও সারের কোনো সংকট হয়নি। শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমান সরকার আমদানির পরিবর্তে নিজস্ব উৎপাদন থেকে সারের যোগান বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে। ৪ হাজার ৮৪৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে নির্মিত শাহজালাল সার কারখানা থেকে বছরে ৫ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি সার উৎপাদন হচ্ছে। পাশাপাশি নরসিংদীর পলাশে বিদ্যমান পুরাতন দুটি ইউরিয়া সার কারখানা ভেঙে এর স্থলে একই পরিমাণ গ্যাস ব্যবহার করে দ্বিগুণ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি অত্যাধুনিক জ্বালানিসাশ্রয়ী ইউরিয়া সার কারখানা নির্মাণ করা হবে। ভবিষ্যতে নিবরচ্ছিন্ন সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউনও নির্মাণ করা হচ্ছে। বিএফএর চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, কৃষি সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ, বিসিআইসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল, বিএফএর সহ-সভাপতি মো. মোমেন সরকার প্রমুখ। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ এপ্রিল ২০১৭/নাসির/রফিক