অর্থনীতি

সরকার চাইলে রোহিঙ্গাদের সাহায্যে অনুদান দেবে এডিবি

বিশেষ প্রতিবেদক : সরকার চাইলে রোহিঙ্গাদের সাহায্যে আর্থিক অনুদান দিতে প্রস্তুত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে এডিবি যেহেতু একটি ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান, সেহেতু অনুদান কী প্রক্রিয়ায় হতে পারে, তা নির্দিষ্ট করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন এডিবির মহাপরিচালক হুন কিম। এ সময় বাংলাদেশে নবনিযুক্ত এডিবির আবাসিক প্রতিনিধি মনমোহন প্রকাশ উপস্থিত ছিলেন। এডিবির মহাপরিচালকের নেতৃত্বে বর্তমানে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করছে। সাক্ষাৎ শেষে এডিবির দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক হুন কিম সাংবাদিকদের বলেন, আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশকে ১৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে এডিবি। তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি আমরা ক্লোজলি মনিটরিং করছি। এ সমস্যা থেকে উত্তরণে বাংলাদেশ সরকার আর্থিক সহযোগিতা চাইলে তা দিতে প্রস্তুত আছে এডিবি। এডিবির মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন পদ্ধতিতে সরকারের অবস্থান ও পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় সহায়তা করার বিষয়ে তিনি বলেন, বন্যাদুর্গতদের জন্য এডিবির সহায়তা খুবই সামান্য। বাংলাদেশে যখন সিডর হয়েছিল তখন সরকারের অনুরোধে গ্রামীণ এলাকার কিছু প্রকল্পে সহায়তা করেছিল এডিবি। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক বড় হয়েছে। এখন ২০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থনীতি। প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ এডিবির সবচেয়ে বড় ঋণগ্রহীতা। বাংলাদেশ যত বেশি খরচ করতে পারবে, এডিবি তত বেশি বিনিয়োগ করবে। পরে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে এডিবির মহাপরিচালকের সঙ্গে তার আলোচনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এ সময়  রোহিঙ্গাদের সাহায্যের জন্য এডিবির সহায়তা চাওয়া হবে কি না, তা অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই চাওয়া হবে। এটা সম্পূর্ণ একটি মানবিক বিষয়। বিশ্ব ব্যাংকের কাছে চাওয়া হয়েছে। এডিবির কাছেও চাইব। তবে কত চাওয়া হবে এখনো তা ঠিক করা হয়নি। এ বিষয়ে একটি প্রকল্প তৈরি করতে হবে। অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, এডিবির অর্থায়নে দেশে বর্তমানে ৫১টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এসব প্রকল্পে মোট ৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে, যার পুরোটাই এডিবি দিচ্ছে। এছাড়া  এডিবির অর্থায়নে ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যকার যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের সহায়তা দিতে গিয়ে চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি হবে কি না এবং মন্ত্রণালয়গুলোর চাহিদা অনুযায়ী অর্থ যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, শুরুতে ভেবেছিলাম, রোহিঙ্গাদের সহায়তা দিতে গিয়ে বাজেটের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু এখন আর তা ভাবি না। আমি মনে করি না তেমন  প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়গুলোর চাহিদামতো তাদের অর্থ সরবরাহ করা হচ্ছে। কারণ, তারা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ চাচ্ছে। অতিরিক্ত অর্থ চাচ্ছে না। চলতি বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর নির্মম অত্যাচারে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ৬ লাখের বেশি। বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা আরো লাখ খানেক বেশি। এছাড়া আগে থেকেই ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে থাকেন। এতে মোট রোহিঙ্গা সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখের বেশি।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ নভেম্বর ২০১৭/হাসনাত/হাসান/রফিক