অর্থনীতি

বিকেন্দ্রীকরণ আয়কর মেলা, নেই উপচেপড়া ভিড়

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : নিয়মিত আয়কর মেলার পরপরই রাজধানীসহ দেশের ৩১ কর অঞ্চলে রোববার থেকে শুরু হয়েছে বিকেন্দ্রীকরণ আয়কর মেলা। মেলার মতোই প্রায় সকল সেবা পাওয়া গেলেও নেই করদাতাদের উপচেপড়া ভিড়। বুধবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত কর অঞ্চল ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে। প্রতিটি কর অঞ্চল অফিসগুলোতে অফিস কক্ষের বাইরেও পৃথক বুথ দিয়ে কর সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। করদাতারাও বেশ সন্তুষ্ট আয়কর রিটার্ন জমা ও নতুন ই-টিআইএন নিবন্ধন নেওয়াসহ কর সংশ্লিষ্ট সেবা পেয়ে। পৃথক কর অঞ্চল ও সার্কেল হওয়ায় কর অঞ্চলেও অফিসগুলোতে অতিরিক্ত চাপ লক্ষ করা যায়নি। রাজধানীর সেগুনবাগিচার তোপখানা রোডে অবস্থিত কর অঞ্চল ১১ অফিসের প্রতিটি ফ্লোরে করদাতাদের সেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ অঞ্চলে ২২টি সার্কেল অফিস রয়েছে। এখানে করদাতাদের উপস্থিতি লক্ষ করা গেলেও নেই অতিরিক্ত ভিড়। কর অঞ্চল-১১ থেকে দেওয়া তথ্যানুসারে, বিকেন্দ্রীকরণ আয়কর মেলায় গত দুই দিনে ৬২৮টি রিটার্ন জমা পড়েছে। যেখান থেকে ১ কোটি ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮১৩ টাকা কর আদায় হয়েছে। এই কর অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহীন ঢালী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমাদের কর অঞ্চলের অফিসে মেলার সুবিধায় করদাতারা কর সেবা নিচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এই জোনের করদাতা। তাই তাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে আমরা নিজ অফিসের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়কর ক্যাম্পের আয়োজন করেছি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যাররা ওই আয়কর ক্যাম্প থেকেই আয়কর রিটার্ন জমা ও করসেবা নিচ্ছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘রাজধানীতে শুধু আমাদের কর অঞ্চল থেকে আয়কর ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। তাই আমাদের অফিসে ভিড় নেই বললেই চলে। করদাতাদের কোনো অভিযোগও এখন পর্যন্ত আমার কাছে আসেনি।’ প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে কর অঞ্চল-৮ এর অফিসে। ওই কর অঞ্চলের নিচতলায় আয়োজন করা হয়েছে মেলার মতোই ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন, আয়কর রিটার্ন, হেল্প ডেস্কসহ আয়কর সংশ্লিষ্ট সকল ধরনের সেবার বুথ। মেলায় রিটার্ন জমা দেওয়া করদাতা মকবুল হোসেন সন্তোষ প্রকাশ করে রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আয়কর মেলায় যাওয়া হয়নি। তাই কর সার্কেলে রিটার্ন জমা দিলাম। যদিও ট্যাক্স কার্ড পাইনি। ২০ তারিখের পরে আসতে বলেছেন। তবে কোনো হয়রানি হতে হয়নি। আমাদের দাবি থাকবে কর অফিসগুলোতে সারা বছরই যেন এরূপ পরিবেশ বিরাজ করে।’ কর অঞ্চলগুলো ঘুরে দেখা গেছে, আয়করের বিভিন্ন স্লোগান ও সেবার বিবরণ সংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন দিয়ে বুথ সাজানো হয়েছে। মেলার মতো এসব বুথে কর্মকর্তা রিটার্ন পূরণ, ই-টিআইএন, রিটার্ন গ্রহণসহ অন্যান্য করসেবা দিচ্ছেন। সব ধরনের ফর্ম, আয়কর নির্দেশিকা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। আগামী ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস। ব্যক্তি শ্রেণির আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় শেষ দিন। রিটার্ন দাখিলসহ করসেবা প্রদানের জন্য এনবিআর সারা দেশে সপ্তাহব্যাপী (১-৭ নভেম্বর) আয়কর মেলার আয়োজন করে।  করদাতাদের সেবা দেওয়ার উদ্দেশে মেলাকে বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে ১২-৩০ নভেম্বর সকল কর অঞ্চলে করসেবা এবং ২০ নভেম্বর থেকে সকল কর অঞ্চলগুলোত ট্যাক্স প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআর। এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, ‘এনবিআর করদাতাদের অধিকতর করসেবা প্রদানের জন্য উদ্ভাবনী পন্থায় কাজ করছে। করদাতাদের আধুনিক ও যুগোপযোগী সেবা দেওয়া আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সম্মানিত করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের সুবিধার্থে আগামী ১২ থেকে ৩০ নভেম্বর সকল কর অঞ্চলে বিকেন্দ্রীকৃত আয়কর মেলা চলছে। পাশাপাশি কর অঞ্চল থেকে আগামী ২০ থেকে ২৮ নভেম্বর করদাতাদের এ কার্ড প্রদান করা হবে। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে এ কার্ড দেওয়া হবে। এ ছাড়া ২৪ থেকে ৩০ নভেম্বর আয়কর সপ্তাহ পালন করা হবে।’

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ নভেম্বর ২০১৭/এম এ রহমান/সাইফুল