অর্থনীতি

সবুজ শিল্পে ১২ শতাংশ কর কোনোভাবেই কাম্য নয়

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : সবুজ শিল্পের জন্য কর ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, বাজেটে ব্যাংক খাতে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করপোরেট কর কমানো হয়েছে। কিন্ত উৎপাদনমুখী পোশাক শিল্পে তা বাড়িয়ে ১০-১২ শতাংশ করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। শনিবার রাজধানীর বিজিএমই ভবনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটবিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সিদ্দিকুর রহমান বলন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রস্তাবনায় করপোরেট করহার ১২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ এবং সবুজ শিল্পের জন্য ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে, যেখানে আমাদের অনুরোধ ছিল করপোরেট করহার ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণের। করপোরেট করহার বাড়ানোর ফলে পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হবেন। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, পোশাক শিল্পে করপোরেট করহার ১০ শতাংশ নির্ধারণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে। বর্তমান পরিস্থিতিকে পোশাক শিল্পের সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনা করে পোশাক রপ্তানির ওপর উৎসে কর আগামী তিন বছরের জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান তিনি। সেইসাথে একই রপ্তানি এলসির বিপরীতে প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকদের যেমন সুতা, কাপড়, এক্সেসরিজ সরবরাহকারীদের থেকেও একই হারে উৎসে কর কর্তন করা হচ্ছে। এটি কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয় বলেও আমরা মনে করছি। তিনি আরো বলেন, রপ্তানি-সংশ্লিষ্ট স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত সব পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে ভ্যাট মওকুফসহ রিটার্ন দাখিল করা থেকে অব্যাহতি প্রদান করার জন্য আমরা অনুরোধ জানিয়েছিলাম। এছাড়াও বিগত ৫/৬ বছরের যে ভ্যাট দাবি করা হচ্ছে, তাও মওকুফ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে ঘোষিত বাজেটে কোনো দিক-নির্দেশনা নেই। আবার গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির উওপর প্রদত্ত মূসক প্রত্যর্পণের ক্ষেত্রে জটিলতা দূরীকরণের লক্ষ্যে ১০০ শতাংশ মূসক অব্যাহতি প্রদান করার প্রস্তাবও রেখেছিলাম। কিন্তু সে ব্যাপারেও কোনো নির্দেশনা নেই। আশা করছি সরকারের সাথে আলোচনায় বসে এ বিষয়ে সমাধান হবে। এদিকে প্রতিযোগী দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা, কর্মসংস্থান, রপ্তানি ও জাতীয় স্বার্থে পোশাক শিল্পের সক্ষমতা ধরে রাখা এবং এর সুরক্ষার জন্য রপ্তানি বিলের ওপর শূন্য দশমিক ২ শতাংশ হারে স্ট্যাম্প শুল্ক কর্তন করা থেকে তৈরী পোশাক শিল্পকে অব্যাহতি প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছিল। এ ব্যাপারেও বাজেটে কিছু বলা হয়নি। অথচ ডেফার্ড পেমেন্টে রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকরা ৩/৪ মাস পর পেমেন্ট পেয়ে থাকেন। তার ওপর আরও শূন্য দশমিক ২ শতাংশ হারে স্ট্যাম্প শূল্ক কর্তন করা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো বলেও জানান তিনি। সম্প্রতি আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় যাওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করেছি। এজন্য আমাদের সামনে অনেক কাজ করতে হবে। ২০২৭ সালে এটি চূড়ান্তভাবে অর্জিত হলে আমাদের আন্তর্জাতিক বাজারে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। যা মোকাবিবেলার জন্য ব্যবসার খরচ কমাতে হবে। এটি সম্ভব হবে সহায়ক নীতি কৌশলের মাধ্যমে। বাজেটে এ বিষয়টির ওপর আলাদাভাবে কোনো প্রতিফলন আমরা দেখতে পাইনি। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ জুন ২০১৮/নাসির/মুশফিক