অর্থনীতি

পুঁজিবাজার গড়ে ওঠার ভিত্তি তৈরি করা হয়েছে: অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, পুঁজিবাজার এখনো গড়ে উঠেনি, তবে গড়ে ওঠার মতো ভিত্তি তৈরি করা হয়েছে। কাজেই অচিরেই এ বাজার গড়ে ওঠবে। রোববার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ সিকিউরিটি একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আয়োজিত ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ-২০১৮’ উপলক্ষে আয়োজিত এক কনফারেন্সে এ কথা বলেন তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে দুই বার বড় ধস হয়েছে। যার ফসল হিসাবে বাজারে নানা সংস্কার হয়েছে। এক্ষেত্রে বিএসইসি এর বর্তমান কমিশন ৮ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে এবং তারা দক্ষতার নিদর্শন দেখিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিনিয়োগ আসলেই খুবই কম। আমরা এখন হয় তো ৩০ শতাংশ বিনিয়োগ করছি। তার মধ্যে ২২ শতাংশ বেসরকারি খাতের, বাকিটা সরকারের। আমাদের প্রতিবেশি দেশগুলোতে বিনিয়োগের হার অনেক বেশি। ভারতে বিনিয়োগের হার সব সময় বেশি ছিল। এটা নতুন কিছু নয়। ত্রিশের দশকেও ভারতের বিনিয়োগের হার ৩০ শতাংশের বেশি ছিল। ‘যাই হোক আমরা একটু একটু করে ঠেলেঠুলে বিনিয়োগ প্রায় ৩০ শতাংশে নিয়ে এসেছি। আশা করছি, এটা আরো  একটু বাড়বে এবং আর একটু বাড়লে আমাদের অর্থনীতির যে একটি ঊর্ধ্বগতি এসেছে এটা আরো বেগবান হবে, আর শক্তিশালী হবে’। বিএসইসি চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের স্বার্থে কাট-অফ প্রাইসের তুলনায় ১০ শতাংশ কমে শেয়ার দেওয়া হয়। পুঁজিবাজারের স্বার্থে প্রয়োজন হলে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিও স্থগিত বা বন্ধ করা হবে। এছাড়া তাদের স্বার্থে একটি কোম্পানির ৪৫ টাকার কাট-অফ প্রাইস ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট শেষে গাণিতিক হিসাবে ৪১ টাকা হলেও ৪০ টাকা করা হয় বলেও জানান তিনি। এ সময় বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণে যোগ্য বিনিয়োগকারীদেরকে যথাযথ দায়িত্ব পালনের জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) জন্য মিথ্যা হিসাব (ফলস অ্যাকাউন্ট) নিয়ে আসলে বিএসইসির কিছু করার থাকে না। এক্ষেত্রে নিরীক্ষক ও মার্চেন্ট ব্যাংকারদেরকে সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা পায়। আর বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ সুরক্ষার প্রধান উপাদান শিক্ষা। এই শিক্ষা ছাড়া কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগের সুরক্ষাও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বিনিয়োগ সুরক্ষায় আইনকানুন পরিপালন, মনিটরিং জোরদার ও সঠিক রিপোর্টিংয়ের দরকার। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিঘ্নিত হয় এমন কোনো  কাজ না করার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংকারদের প্রতি অনুরোধ করাসহ একইসঙ্গে ৫ বছর লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা নেই এমন কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে না আনার জন্য আহ্বান জানান তিনি। খায়রুল হোসেন বলেন, আইওএসকোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিএসইসিও দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ পালন করছে। তবে বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের জন্য আরো আগে থেকেই নানা ধরনের প্রোগ্রাম শুরু করে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, সারা বিশ্বে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। যা বাংলাদেশেও বিদ্যমান। এরই ফলশ্রুতিতে শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনতে কাজ করে যাচ্ছে বিএসইসি। বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দ্রুত বড়লোক হওয়ার প্রবণতা দূর করতে হবে। একইসঙ্গে শিক্ষাকে বাস্তবে প্রয়োগ করতে হবে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ অক্টোবর ২০১৮/নাসির/সাইফ