অর্থনীতি

সিপিডি নয়, আমরা বড় : অর্থমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক : বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর প্রকাশিত তথ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, ‘সিপিডি তাদের কাজ করছে, আমরা আমাদের কাজ করছি।  তারা যে তথ্য দিয়েছে তা ঠিক নয়। ’ এ সময় অর্থমন্ত্রী সিপিডির তথ্য-উপাত্ত চেয়ে বলেন, ‘আমরা তাদের চেয়ে বড়।’ বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে এক বৈঠক শেষে বের হওয়ার সময় সরকারের ১০০ দিন নিয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি প্রকাশিত বিভিন্ন তথ্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘তাদের (সিপিডি) কাছে যা আছে সেগুলো আগে আমাকে দিতে বলেন।  তাদের থেকে আমরা বড়।  তাদের কাছে কী আছে সেগুলো আমাদের দিক।’ মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে কো-অর্ডিনেশন কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।  এই বৈঠকে সরকারের আয়-ব্যয়ের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা হয়। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।  বিষয়টি একমাত্র প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন।’ গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান সরকারের ১০০ দিন নিয়ে কথা বলেন সিপিডির দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।  ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বাধীন পর্যালোচনা : বর্তমান সরকারের প্রথম একশ দিন’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাময়িক হিসাব করা ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিকে ঈর্ষণীয় বলেছে সিপিডি।  উৎপাদন খাতের ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধিই জিডিপির প্রবৃদ্ধি চালিকাশক্তি।  তবে সিপিডি এ প্রবৃদ্ধির হিসাব নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছে।  সিপিডির মতে, এ হিসাব বাস্তবসম্মত নয়।  অর্থনীতির সূচকগুলোর সঙ্গে এর মিল নেই। জিডিপির হিসাব আরো গভীরে গিয়ে করা উচিত।  তা না হলে নীতিনির্ধারণে সমস্যা হবে। কিছু অসংগতি তুলে ধরে জিডিপির হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিডি। তারা বলেছে, উৎপাদন খাতনির্ভর প্রবৃদ্ধি হয়েছে।  বিবিএসের হিসাব, চামড়া খাতে প্রথম প্রান্তিকে সাড়ে ৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।  অথচ রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রবণতা রয়েছে।  রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি মাত্র ৬ শতাংশ।  কিন্তু চলতি মূল্যে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে ১২ দশমিক ৭ শতাংশ। আবার ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহে প্রবৃদ্ধি সাড়ে ১২ শতাংশ।  কিন্তু গতবার একই সময়ে এ খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল সাড়ে ১৮ শতাংশ।  সিপিডির মতে, বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী এই প্রবৃদ্ধি অর্জনের মানে হলো, শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা বেড়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এ প্রবৃদ্ধি অর্জনে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের ভূমিকা দেখিনি।  আবার কর আহরণের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি নেই।  ব্যক্তি খাতের ঋণপ্রবাহ বেশি হয়নি।  মূলধনী পণ্যের আমদানিও বেশি দেখা যায়নি।  ব্যাংক খাতেও চাঞ্চল্য নেই।’ তবে সরকারের কিছু ভালো উদ্যোগের বিষয়ে জানায় সিডিপি।  ভালো উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে বিদেশি কর্মজীবীদের বিষয়ে জরিপ চালিয়ে করের আওতায় আনার উদ্যোগ, মানি লন্ডারিং বিধিমালা জারি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপনকে করের আওতায় আনা

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ এপ্রিল ২০১৯/হাসনাত/সাইফুল