অর্থনীতি

নতুন ভ্যাট আইনে ব্যবসায়ীদের ১০ প্রস্তাব

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : আসছে বাজেটে নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) আইন বাস্তবায়নে ১০ প্রস্তাব দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরামর্শক কমিটির ৪০ তম সভায় এসব প্রস্তাব দেয় এফবিসিসিআই। এফবিসিসিআই প্রস্তাবনায় বলেছে, সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী ভ্যাটের হার ৫, ৭.৫ ও ১০ শতাংশ নির্ধারণ, ভ্যাট অব্যাহতির সীমা ৩৬ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ লাখ টাকায় উন্নীত করা, টার্নওভার করের সীমা ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত ৪ শতাংশ ভ্যাটসহ অন্যান্য সিদ্ধান্ত দেন। সরকারের প্রস্তাবকে মেনে নেওয়ার দাবি জানিয়ে এফবিসিসিআই বলছে, টার্নওভার কর ৪ শতাংশের পরিবর্তে ৩ শতাংশ করা উচিত। অন্যদিকে, একাধিক হারে ভ্যাট নির্ধারণ করলেও রেয়াতের বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে দাবি করে ১৫ শতাংশের মতো ১০ শতাংশ হারেও রেয়াত দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। নতুবা এক্সাইজ ট্যাক্স হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মনে করে শীর্ষ এই সংগঠন। অন্যদিকে প্যাকেজ ভ্যাটের পরিবর্তে ক্ষুদ্র, গ্রামীণ উদ্যোগ ও কুটির শিল্প খাতের জন্য টার্নওভার করের আওতায় সকল পর্যায়ে অব্যাহতির সীমা বাৎসরিক ৩৬ লাখ টাকার পরিবর্তে ৫০ লাখ টাকায় উন্নীত করার সুপারিশ করছে এফবিসিসিআই। এদিকে আসছে বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো ও করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনটি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) যৌথভাবে সভাটি আয়োজন করে। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে  অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এফবিসিসিআইয়ের পক্ষে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, গত চার বছর ধরে ব্যক্তি করমুক্ত আয়কর সীমা একই রাখা হয়েছে। অথচ এ সময়ে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়েছে। ফলে, এটি আড়াই লাখ টাকা রাখার কোনও যৌক্তিকতা নেই। তাই এটি বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা করা হোক। তিনি সকল ক্ষেত্রে করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেন। শফিউল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে আগামী বাজেটে ৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা করা হোক। নারী ও পয়ষট্টি বছর বা তদূর্ধ্ব করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ কোটি টাকায় উন্নীতকরণ ও প্রতিবন্ধি করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হোক। অন্যদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট কর ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২২ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর পুঁজিবাজারের তালিকা বহির্ভূত কোম্পানির ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ ও নন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ক্ষেত্রে সাড়ে ৩২ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। এছাড়া, মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট কর সাড়ে ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে, পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ও তালিকা বহির্ভূত ব্যাংক বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত নয় এমন বিদেশি কোম্পানির প্রত্যাবসানযোগ্য মুনাফার ওপর করপোরেট কর ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ এপ্রিল ২০১৯/এম এ রহমান/সাইফ