অর্থনীতি

বেসিক ব্যাংকের লোকসানি শাখা বন্ধের নির্দেশ

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : গত দুই বছর ও চলতি বছরে বেসিক ব্যাংকের যেসব শাখা লাভ দেখাতে পারবে না সেসব শাখা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলের সেনা কল্যাণ ভবনে বেসিক ব্যাংক কার্যালয়ে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে আলোচনা সভায় এ নির্দেশ দেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের দেশের বাইরে যেতে দেয়া হবে না। এখনো সময় আছে টাকা ফেরত দিন। শিগগিরই ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে কঠিন সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।

তিনি বলেন, আপনারা (বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা) চুপ করে থেকে ভাববেন, বেঁচে গেছেন, তা হবে না। যে সমস্ত ব্রাঞ্চ লসে আছে, সেগুলোকে এই বছর প্রফিটে আনার চেষ্টা করেন। অনেকে আছে, যারা লোন নিয়েছে ঠিকানাবিহীন, তারা আর ঠিকানাবিহীন থাকবে না। আমি আন্ডারকাভার এজেন্সির লোক নিয়োগ দেব। তারা এদেরকে চিহ্নিত করার কাজ করবে। দেশ-বিদেশে যেখানেই থাকুক তাদের বের করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

তিনি বলেন, আমি সহযোগিতা করব। কিন্তু আমি কারো ঋণ মাফ করে দিতে পারব না। ঋণ সহজভাবে পরিশোধের জন্য সব সহযোগিতা করব। তারা ঋণ পরিশোধ করলে তাদের ব্যবসা করার সুযোগ দেবেন। কারণ, তারা খারাপ তা আমি বিশ্বাস করি না। আপনারা তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। সমস্যা ছিল ম্যানেজমেন্টের। আর একটা কথা মনে রাখবেন- অর্থের অভাবে কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয় না, বন্ধ হয় ম্যানেজমেন্টের সমস্যার জন্য।

ব্যাংক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমানে ব্যাংকটির প্রায় ৩৬টি শাখা লোকসানে আছে। বেসিক ব্যাংকে স্পেশাল অডিট করা হবে। অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কম হলেও শাস্তি দেয়া হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ব্যাংক ইচ্ছা করলে খেলাপি ঋণ আদায় করতে পারে। ঋণ আদায়ে শক্ত হতে হবে। বর্তমানে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে সরকার পুনঃতফসিলের সুযোগ দিয়েছে। এটি গ্রহণ করে কেউ যদি আসে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। এত দুর্নাম নিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

ব্যাংকটিতে নিয়োগ দেয়া নতুন এমডিকে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেয়ার অনুরোধ করে তিনি আরো বলেন, যেসব কর্মকর্তা কাজ না করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মাজিদ বলেন, বেসিক ব্যাংকে বেশকিছু ঋণের অনিয়ম হয়েছিল। আমরা অনিয়মগুলো চিহ্নিত করে ঋণ আদায় ও পুনঃতফসিল করি। কিন্ত দেখা গেছে, পুনঃতফসিল করা ঋণও আবার খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। এখন নন-পারফরমেন্স লোন ৫৯ শতাংশে এসেছে। পূর্বে যা ছিল ৬৭ শতাংশ। এ অবস্থায় আমাদের মূলধন সহায়তা প্রয়োজন। তা পেলে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।

বেসিক ব্যাংক পরিদর্শন করায় অর্থমন্ত্রীকে ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি সম্মাননা স্মারক দিতে চাইলে তিনি তা নিতে রাজি হননি।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রফিকুল আলম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব ফজলুল হক প্রমুখ। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ আগস্ট ২০১৯/নাসির/রফিক