অর্থনীতি

রপ্তানি প্রণোদনা পাবে নতুন ১৩ পণ্য

বিশেষ প্রতিবেদক : রপ্তানির বিপরীতে সরকারের দেয়া প্রণোদনা বা নগদ সহায়তার তালিকায় যোগ হলো আরো ১৩টি নতুন পণ্য।

সেই সঙ্গে প্রবাসীদের পাঠানো এককালীন ১ হাজার ৫০০ ডলারের রেমিট্যান্সের ওপর কোনো প্রশ্ন ছাড়াই ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে এর বেশি হলেই পাঠানো রেমিট্যান্স নিরীক্ষার আওতায় আনা হবে।

সোমবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে নগদ সহায়তার বিদ্যমান হারসমূহ পুনঃনির্ধারণ ও নতুন নতুন খাতে নগদ সহায়তা প্রদান সংক্রান্ত বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে অর্থ সচিব বলেন, প্রতি বছরই রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার জন্য, বিশেষ করে যারা নতুন নতুন পণ্য রপ্তানি করছেন তাদের উৎসাহিত করার জন্য সরকার প্রণোদনা দিয়ে থাকে। তারই ধারবাহিকতায় চলতি অর্থবছর কোন কোন খাতে কত প্রণোদনা দেয়া হবে তা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাত আগে থেকেই প্রণোদনা পেয়ে আসছে। তবে ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডায় পোশাক রপ্তানির প্রণোদনা দেয়া হতো না। এখন থেকে ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডায় পোশাক রপ্তানি করলে ১ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হবে। এজন্য নতুন করে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। যা চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

অর্থ সচিব বলেন, আজকের বৈঠকে নতুন কিছু খাতে নগদ সহায়তা বাড়ানো হয়েছে। রপ্তানিতে প্রণোদনা বাড়ানোর জন্য ২৪টি প্রস্তাব এসেছিল। এর মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে বেশ কয়েকটি পণ্যে প্রণোদনা বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডায় রপ্তানিতে ১ শতাংশ প্রণোদনা, মেডিক্যাল সার্জিক্যাল যন্ত্রাংশ  ও হালকা প্রকৌশল খাতে ১০ শতাংশ, মহিষের নাড়ি-ভুড়ি ও শিং রপ্তানি, পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, কেমিক্যাল পণ্য, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও আইটিইএস পণ্য, শস্য, শাক-সবজি, পেট বোতল, সুপারি পাতার তৈরি পণ্য, ঝুট কাপড় দিয়ে তৈরি পণ্যে ১০ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হবে। এছাড়া, সি ক্যাটাগরির  সিনথেটিক পণ্য, ইপিজেডের অ্যাগ্রোপ্রসেসিং পণ্যে ৪ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হবে।

রেমিট্যান্স খাতে প্রণোদনা প্রসঙ্গে অর্থ সচিব বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর এখন থেকে ২ শতাংশ প্রণোদনার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে একটি নিয়ম অনুসরণ করে সকলকে রেমিট্যান্স পাঠাতে হবে। সেটা হলো- এককালীন ১ হাজার ৫০০ ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠালেই তাদেরকে নিরীক্ষার আওতায় আসতে হবে। এ বিষয়টি আজ অনুমোদন দেয়া হলো। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষে প্রজ্ঞাপন জারি করবে।

কর্মসংস্থান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রউফ তালুকদার  বলেন, রাষ্ট্রে কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্যই রপ্তানিতে প্রণোদনা বাড়ানো হচ্ছে। সরকারের মূল উদ্দেশ্যই হলো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। আমরা কাস্টমস, ট্যাক্স কম পাচ্ছি, তার মানে আমাদের গামেন্টস যন্ত্রাংশ ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানি হচ্ছে। এতে দেশে নতুন শিল্পকারখানা হবে। পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি  ৮ দশমিক ২ শতাংশ অর্জন করাই মূল লক্ষ্য। আমাদের এখন যারা বেকার তারা সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত। যারা কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করেছেন তাদের খুব কম সংখ্যকই বেকার। আমাদের এখন কারিগরি শিক্ষার দিকে যেতে হবে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ আগস্ট ২০১৯/হাসনাত/রফিক