আয়কর মেলার তৃতীয় দিনেও করদাতাদের লম্বা লাইন। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে করসেবা গ্রহণ ও রিটার্ন দাখিল করছেন তারা।
রাজধানীর বেইলী রোডের অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত মেলায় শনিবার সরকারি ছুটির দিনে সকাল থেকেই করদাতারা আসতে শুরু করেন।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়তে থাকে। এক পর্যায় করদাতাদের লম্বা লাইন রাস্তা পর্যন্ত চলে আসে। সবচেয়ে বেশি ভিড় রিটার্ন বুথগুলোতে।
জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা আসিফ হোসেন এসেছেন বেইলী রোড থেকে। প্রতিবছর মেলায় রিটার্ন জমা দেন। কর অফিসের হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে আয়কর মেলাকে সর্বোত্তম মনে করেন তিনি। মেলার সেবায় সন্তোষ প্রকাশ করেন ওই ব্যাংকার।
এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘আয়কর মেলায় সম্মানিত করদাতাদের উপস্থিতি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের আগ্রহ ক্রমাগত বাড়ছে। উৎসবের আমেজে মানুষ দলে দলে আয়কর মেলায় রিটার্ন জমা দিচ্ছেন। কোনো রকম হয়রানি ছাড়াই নির্ভয়ে ও স্বাচ্ছন্দ্যে রিটার্ন জমা দিয়ে রশিদ নিচ্ছেন। বিশেষ করে নারী করদাতাদের আজকের মেলাতে উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। এবারের বাজেটে রাজস্বের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা অর্জনের জন্য আমরা নিরলস প্রচেষ্টা করে যাচ্ছি। সাধারণ মানুষকে উৎসাহী করছি।’
এদিকে আয়কর মেলার দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত
৮০২ কোটি ২০ লাখ ২২ হাজার ৬৮২ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ পর্যন্ত মেলায় সেবা গ্রহণ করেন ৪ লাখ ৪ হাজার ৪৪২ জন, রিটার্ন দাখিল হয়েছে এক লাখ ৩৭ হাজার ১১৫ এবং নতুন ই-টিআইন নিবন্ধন নিয়েছেন ৭ হাজার ৯৬৮ জন করদাতা।
এর মধ্যে আয়কর মেলার দ্বিতীয় দিনে
৪৭৯ কোটি এক লাখ ২৮ হাজার ৭৯৭ টাকা রাজস্ব আদায় হয়।
মেলার প্রথম দিনেই রেকর্ড প্রায় ৪৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে ৩২৩ কোটি ১৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮৫ টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করেছে এনবিআর।
কর প্রদানে স্বতঃস্ফূত অংশগ্রহণ, নিশ্চিত হোক রুপকল্প বাস্তবায়ন’ - এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলা। এ বছর দেশের ৮টি বিভাগ, ৫৬ জেলা, ৫৬ উপজেলাসহ মোট ১২০ স্থানে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলার পরিধি গতবছরের চেয়ে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে মেলা।
মেলায় আয়কর রিটার্ন দাখিল, ই-টিআইন গ্রহণ, ই-পেমেন্ট, ই-ফাইলিং, ই-পেমেন্টের ব্যবস্থা রয়েছে। বিশেষ আকর্ষণ মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করে করদাতারা রকেট, নগদ, বিকাশ ও প্রযোজ্য শিওর ক্যাশের মাধ্যমে আয়কর জমা দিতে পারছেন।
মেলায় করদাতাদের সুবিধার্থে ৫২টি আয়কর রিটার্ন বুথ, ৫৩টি হেল্প ডেস্ক, ব্যাংক বুথ (সোনালী ব্যাংক ১৩টি, জনতা ব্যাংক পাঁচটি এবং বেসিক ব্যাংক চারটি), ই-পেমেন্টের জন্য তিনটি, ই-ফাইলিংয়ের জন্য দুটি বুথ পৃথক রয়েছে।
এ ছাড়া মেলায় আগত সম্মানিত করদাতাদের তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য একটি মেডিক্যাল বুথ রয়েছে। ঢাকা/এম এ রহমান/ইভা