অর্থনীতি

বাণিজ্য মেলায় ওয়ালটনের সর্ববৃহৎ বিক্রয় টিম

এম মাহফুজুর রহমান : বাণিজ্য মেলাসহ অনেক বড় মেলাগুলোতে মাল্টিন্যাশনাল ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটনের সরব উপস্থিতি থাকে। এসব মেলায় নিজস্ব কর্মী বাহিনীর পাশাপাশি চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে ওয়ালটন।

নানান সুবিধা থাকায় যেকোনো মেলাতেই কাজ করার ক্ষেত্রে চাকরি প্রার্থীদের পছন্দের শীর্ষে থাকে ওয়ালটন। সাধারণত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বা সদ্য পড়াশোনা শেষ করে যারা চাকরি খুঁজছেন তাদেরই এসব মেলায় খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

বাণিজ্য মেলার চলমান ২৫তম আসরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন প্রায় ৫০ জন ‘সেল্স এক্সিবিটর’। যাদের সবাই নারী। পাশাপাশি কাজ করছেন ওয়ালটনের দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। সব মিলিয়ে বাণিজ্য মেলায় পণ্য বিপণনে ও প্রদর্শনে কাজ করছে সর্ববৃহৎ টিম।

ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের এসি বিভাগে কর্মরত পুরুষ সেল্স এক্সিবিটরদের একাংশ

উল্লেখ্য, মেলায় রয়েছে তিন তলা বিশিষ্ট ওয়ালটনের দু’টি দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলিয়ন। যেখানে প্রদর্শন করা হচ্ছে ওয়ালটনের রেফ্রিজারেটর, কম্প্রেসর, এয়ারকন্ডিশনার, লিফট, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ-কম্পিউটার ইত্যাদি প্রযুক্তিপণ্য।

সব ধরনের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে ওয়ালটন। পণ্য কেনায় আরো নানান সুবিধা থাকায় প্রতিদিনই প্যাভিলিয়নে ভিড় করছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা।

কর্তৃপক্ষ জানায়, নির্বিঘ্নে মেলা পরিচালনার জন্য ৮৩ সদস্যের একটি ‘মেলা পরিচালনা কিমিটি’ গঠন করা হয়েছে। মেলায় কর্মরত ‘সার্ভিস ম্যান’ রয়েছেন ৫৩ জন। ক্যারিইং ম্যান ও ডেলিভারি ম্যান আছেন যথাক্রমে ২০ ও ১৫ জন। এছাড়া প্যাভিলিয়ন দুটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রয়েছেন ২৬ জন সিকিউরিটি গার্ড।

ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক হুমায়ুন কবীর এবং ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর মুজাহিদুল ইসলাম মেলায় যথাক্রমে পরিচালক ও সহকারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে দশীনার্থীর সঙ্গে কথা বলছেন নারী সেল্স এক্সিবিটররা

এছাড়া ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক এমদাদুল হক সরকার, ইভা রেজওয়ানা, মোহাম্মদ রায়হান, ড. মো. শাখাওয়াত হোসেন, লিয়াকত আলী, মাহবুবুল হাসান মিল্টন-এর পাশাপাশি সকল প্রোডাক্ট ম্যানেজার প্যাভিলিয়নের ডিসপ্লেসহ সব ধরনের কাজ তদারকি করছেন।

ওয়ালটনের এইচআরএম বিভাগের ফার্স্ট সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর ফয়সাল ওয়াহিদ বলেন, “এবারের বাণিজ্য মেলায় প্যাভিলিয়ন সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। যার ফলে কাজ বেড়েছে কয়েকগুণ। মেলায় সর্বমোট ২৬৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন। পাশাপাশি প্রায় ৫০ জন নারীকে মেলা উপলক্ষ্যে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছি। তারা সবাই দেশব্যাপী বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের কেউ সবেমাত্র লেখাপড়া শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করবেন। শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে এসব নারীরা মেলায় আসছেন। কাজ শেষে কোনো বিপত্তি ছাড়াই ফিরে যাচ্ছেন বাসায়। পরিবহণসহ তাদের সব খরচ বহন করছে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও রয়েছে মাসিক ভাতা।

‘‘নারীরা এখানে কাজ শিখে নিজেদেরকে ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রের জন্য যোগ্য করে তুলছেন। তাদেরকে মেলায় নেয়ার আগে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। দেয়া হয়েছে বিশেষ পোশাক। যা প্যাভিলিয়নকে করেছে আরো মনোমুগ্ধকর।”

ওয়ালটনের ২৬ নম্বর প্যাভিলিয়নে কাজ করছেন ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মিলি। এবছরই ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘ওয়ালটনের সঙ্গে কাজ করছি প্রায় চার বছর ধরে। ওয়ালটনে কাজ করলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। সবকিছুর পূর্বে তারা নারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। নানান সুবিধার পাশাপাশি তারা উচ্চ বেতন দেন। এছাড়া ওয়ালটনের কর্মপরিবেশ খুব ভালো। এসব কারণে আমি ওয়ালটনের সঙ্গে থাকতে স্বাচ্ছন্দবোধ করি।’

বাণিজ্য মেলায় ওয়ালটনের প্যাভিলিয়ন

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, ওয়ালটনের প্যাভিলিয়ন খুবই পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি করে সাজানো। কর্মকর্তাদের পদচারণা এবং কর্মতৎপরতাও চোখে পড়ার মতো। প্রোডাক্ট ডিসপ্লে পদ্ধতিতে আনা হয়েছে নতুনত্ব। যে কারণে প্যাভিলিয়নে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই চোখ জুড়াবে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের।

প্যাভিলিয়ন দুটির বাইরে মুখোমুখি স্থাপন করা হয়েছে ১৬ বাই ১২ ফুটের দুটি বিশালাকার এলইডি টিভি। যেখানে ওয়ালটন পণ্যের অত্যাধুনিক উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং কর্পোরেট ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হচ্ছে নিরবচ্ছিন্নভাবে। এর মাধ্যমে মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে প্রবেশের পূর্বেই ওয়ালটন পণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা পাচ্ছেন।

নির্বাহী পরিচালক হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘অন্যবারের তুলনায় এবার মেলায় আরো বেশি সাড়া পাচ্ছি। ওয়ালটনের সব ধরনের পণ‌্যেই সাড়া পাচ্ছি আমরা। তবে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ওয়ালটনের এয়ার কন্ডিশনার, রেফ্রিজারেটর, টিভি, মোবাইল হ‌্যান্ডসেট ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য। বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের কালারফুল ফ্রিজের প্রতিই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগ্রহ বেশি।’ ঢাকা/সনি