অর্থনীতি

জানুয়ারি-জুনে ১০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি আমদানি

দেশের জ্বালানি তেলের চাহিদা মেটাতে চলতি বছর জানুয়ারি-জুন সময়ের জন্য মোট ১০ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি তেল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ জন্য প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স মূল্য বাবদ ব্যয় হবে পাঁচ হাজার ১৪২ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ২০২০ সালের মোট চাহিদার ৫০ শতাংশ জি-টু-জি ভিত্তিতে এবং ৫০ শতাংশ উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব গত বছর ৩০ অক্টোবর অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়। দেশের জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে মেয়াদী চুক্তির আওতায় জি-টু-জি ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশের ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর সময়ের ২০ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের জন্য  ১০ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে।

যে ৬টি দেশ থেকে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে এর মধ্যে চীনের পেট্রোচায়না থেকে ৬০ হাজার টন গ্যাস ওয়েল। থাইল্যান্ডের পিআইটিটি থেকে ৩০ হাজার টন গ্যাস অয়েল। ইন্দোনেশিয়ার বিএসপি জাপিন থেকে ২১ হাজার মেট্রিক টন গ্যাস অয়েল, ৬০ হাজার টন জেট এ-১, ৪০ হাজার টন মোগ্যাস। চীনের ইউনিপ্যাক থেকে তিন লাখ ৩০ হাজার টন গ্যাস অয়েল। আরব আমিরাতের ইনক থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন গ্যাস অয়েল এবং মালয়েশিয়ার পিটিএলসিএল থেকে এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিকটন গ্যাস অয়েল আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত সময়ে জ্বালানি তেলের প্রকৃত মূল্য হবে বিল অব ল্যান্ডিং (বিএল) তারিখে প্ল্যাটসকে ভিত্তি ধরে ২দিন আগে  এবং ২দিন পরে (২+১+২) অর্থাৎ ৫দিনের গড় মূল্য বা বিএল তারিখে প্ল্যাটস প্রকাশিত না হলে সে ক্ষেত্রে বিএল তারিখের আগের ৩দিন ও পরের ২দিন অর্থাৎ ৫দিনের গড় হিসেবে জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য অনুযায়ী।

উল্লেখ্য যে, বিএল তারিখে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্য ও ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য মানের হ্রাস/বৃদ্ধির কারণে আর্থিক সংশ্লেষ কম/বেশি হতে পারে। বিপিসির বাজেট বরাদ্দ তথা জ্বালানি তেল বিক্রয়লব্ধ অর্থ থেকে প্রস্তাবিত জ্বালানি তেলে আমদানির অর্থায়ন করা হবে বলে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের জন্য তৈরি সার সংক্ষেপে বলা হয়েছে।

২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের জন্য গ্যাস অয়েল আমদানি করা হবে আট লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। এ ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম হিসেবে পরিশোধ করতে হবে ৯৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। রেফারেন্স মূল্য বাবদ তিন হাজার ৯৪০ কোটি ২৪ লাখ টাকা অর্থাৎ মোট চার হাজার ৩৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। জেট এ-১ এক লাখ ২০ হাজার টন। প্রিমিয়াম বাবদ ব্যয় হবে ৩১ কোটি ৮১ লাখ টাকা রেফারেন্স মূল্য বাবদ ৬২২ কোটি ৫৭ লাখ টাকাসক মোট ৬৫৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ফার্নেস অয়েল আমদানি করা হবে ৪০ হাজার মেট্রিক টন। এর জন্য প্রিমিয়াম বাবদ ৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা এবং রেফিারেন্স মূল্য বাবদ ১০৩ কোটি টাকাসহ মোট ১১১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। মোগ্যাস আমদানি করা হবে ৬০ হাজার মেট্রিক টন। এজন্য প্রিমিয়াম দিতে হবে ২৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং রেফারেন্স মূল্য ৩১৫ কোটি ৮ লাখ টাকাসহ ৩৩৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ মোট ১০ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানিতে মোট ব্যয় হবে পাঁচ হাজার ১৪২ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

 

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ