অর্থনীতি

মার্চে নেপালের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর

আগামী মার্চে নেপালের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এছাড়াও নেপাল বাংলাদেশের সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার সচিবালয়ে নিজের অফিস কক্ষে বাংলাদেশে সফররত নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদ্বীপ কুমার গায়ওয়ালী’র সঙ্গে বৈঠক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

বৈঠক শেষে তিনি সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। এসময় নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব শংকর দাস বৈরাগী, ঢাকায় নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ড. বানশিধর মিশ্র, নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ইয়াগা বাহাদুর হামালসহ অন্যান্য কর্মকর্তা।

এছাড়াও বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান (সচিব) ফাতেমা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘‘নেপাল বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র। নেপালের সঙ্গে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) স্বাক্ষরের জন্য দ্রুত কাজ চলছে। আমরা উভয় দেশ এফটিএ স্বাক্ষরের জন্য একমত হয়েছি। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে।

‘বাংলাদেশ নেপালকে ট্রানজিট সুবিধা দিয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য সড়ক, নৌ এবং আকাশ পথ চালু করার বিষয়ে কাজ চলছে। নেপাল সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ এ বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছে।”

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে নেপালের। গত অর্থ বছরে বাংলাদেশ নেপালে ৩৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। একই সময়ে আমদানি করেছে ১৮ দশমিক ১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।

‘বাংলাদেশ এখন পাটজাত পণ্য, ব্যাটারি, তৈরি পোশাক, টয়লেট্রিজ পণ্য, ঔষধসহ বেশ কিছু পণ্য নেপালে রপ্তানি করছে। উভয় দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। এফটিএ স্বাক্ষরের মাধ্যমে এ বাণিজ্য বাড়ানো সম্ভব হবে।”

টিপু মুনশি বলেন, ‘নেপালের সঙ্গে বাণিজ্যে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ব্যবহার করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী দিনগুলোতে উভয় দেশের বাণিজ্য আরো বাড়বে। আগামী ৩ ও ৪ মার্চ ঢাকায় বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সচিব পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে এফটিএ স্বাক্ষর ও উভয় দেশের বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।’

নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘নেপাল বাংলাদেশকে খুবই গুরুত্ব দেয়। উভয় দেশের মানুষ ও জীবনযাত্রার মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। নেপাল তারপরই অবস্থান করছে। বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানো এবং পর্যটক বিনিময়ের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা উভয় দেশ এ সুযোগ ও সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে চাই।

‘ভারতের সহযোগিতায় নেপাল হাইড্রো পাওয়ার উৎপাদন করছে, যা বাংলাদেশে রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ নেপালকে ট্রানজিট সুবিধা দিয়েছে, এজন্য নেপাল বাংলাদেশের কাছে কৃতজ্ঞ।

‘বাংলাদেশ, ভুটান, ইন্ডিয়া, নেপাল (বিবিআইএন) প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে সংশ্লিষ্ট সব দেশ এবং দেশের মানুষ উপকৃত হবেন।

‘বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের বাণিজ্য বাড়ানোর টেকনিক্যাল বিষয়গুলো অধিক গুরুত্ব দিয়ে নেপাল কাজ করছে। এফটিএ স্বাক্ষরিত হলে উভয় দেশের মধ্যে নতুন অর্থনৈতিক যুগের সূচনা হবে। আসন্ন সচিব পর্যায়ের বৈঠকে উভয় দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।” ঢাকা/হাসনাত/সনি