অর্থনীতি

১৭ মার্চ থেকে আগের হারেই ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদ

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী ১৭ মার্চ থেকে ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদ আগের হারে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। এর মধ্যে অটোমেশনের কাজ শেষ হবে। অটোমেশন প্রক্রিয়ার পর ডাকঘর সঞ্চয় স্কিম ২ লাখের বেশি হলেও তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে টিআইএন নম্বর বাধ্যতামূলক করা হবে।

বুধবার সচিবালয়ে অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এক পরিপত্রে ডাকঘরে যে সঞ্চয় ব্যাংক রয়েছে, সেই ব্যাংকের সুদের হার সরকারি ব্যাংকের সুদের হারের সমপর্যায়ে নিয়ে আসা হয়। এতে সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, ডাকঘরে চারভাবে টাকা রাখা যায়। ডাকঘর থেকে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরে সঞ্চয়পত্র কেনা যায়, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে মেয়াদি হিসাব ও সাধারণ হিসাব খোলা যায়। আবার ডাক জীবন বিমাও করা যায়।

এবার সুদের হার কমেছে ডাকঘরের সঞ্চয় স্কিমের মেয়াদি হিসাব ও সাধারণ হিসাবে। সাধারণ হিসাবের ক্ষেত্রে সুদের হার সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।

অবশ্য গত বুধবার ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ডাকঘর সঞ্চয় ব্যবহার করে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকিং অটোমেশন করাতে কেউ লিমিট ক্রস করতে পারবে না। পেনশনভোগীদের জন্য পরিমান বেশি করা হয়েছে। পোস্ট অফিসে বিদ্যমান আইনে রয়েছে ৩০ লাখ, যা অনেক বেশি। সেখানে সুদের হার ১১ দশমিক ২ শতাংশ রাখা হয়েছে।

ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদহার কমনোর কারণ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন দেখলাম সবাই চলে যাচ্ছে পোস্ট অফিসে, বন্ধ করবো কিভাবে, বন্ধ করতে হলে বলতে হবে ইন্টারেস্ট নাই। যদি একবার কিনে ফেলে তাহলে তো করার কিছু নাই, এখন কিনেন ৬ বা ২ বা এক ইন্টারেস্টে কিনে ফেলান।

তিনি বলেন, অটোমেশন শেষ হলে এটার জন্য যা প্রয়োজ্য তা পাবেন। উদ্দেশ্য হচ্ছে ৩০ লাখ যা ৩০ লাখই থাকবে এবং ওখানে যদি ইন্টারেস্ট ১১ পার্সেন্ট থাকে এখানে ১১ পার্সেন্ট থাকবে না কেন। এরা কম পাবে কেন। আমি তো অটোমেশন করতে পারছি না সবাই ওখানে দৌড়াচ্ছে। ১৭ মার্চ অটোমেশন শেষ হলে আগের সুদের হারে চলে যাবে। 

‘একজন মন্ত্রী যখন বলে বিবেচনা করবে বিবেচনা করে। এখানে টকশোতে আমার বিরুদ্ধে কথা শুনতে হচ্ছে। অটোমেশনের কাজ শেষ হলেই এ ঘোষণা দিতে পারব, আশা করছি এ কাজ করতে পারব’ বলেন অর্থমন্ত্রী।

দীর্ঘদিন ধরে যেসব সমস্যা হয়েছিল সেসব জায়গায় শৃঙ্খলা নিয়ে আসা হচ্ছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, অটোমেশন সব জায়গায় করে ফেলতে পারলে, আগে থেকে নীতি নির্ধারণ করলে অনেক ভাল কাজ হত।

ডাকঘর অটোমেশন হওয়ার পর গ্রাহকদের টিআইএন ও আইডি নম্বর নেওয়া হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা জানতে চাই কারা কিনে যাতে করে অপব্যবহার না হয়। পোস্ট অফিসে যে ৩০ লাখ আছে সেখানে লাগবে। তবে প্রথম ২ লাখ পর্যন্ত আমরা কিছু চাইবো না এদেরকে কোন রকম টিআইএন জমা দিতে হবে না, কিন্তু ইন্টারেস্ট ১১ প্লাস পাবে। ২ লাখ পর্যন্ত অনেকে আছে তারা সই করতে পারে না এতটুকু তাদের দিতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হল যাদের জন্য সঞ্চপত্র চালু হল তারাই পাবে, বেশি মিসইউজ হচ্ছিল বলে এভাবে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়েছে।

ব্যাংকিং কমিশন গঠনের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক কমিশন করবো অবশ্যই করবো, তবে কবে করবো তা এখনই বলা সম্ভব না, এর জন্য সময় লাগবে। আমি বাজেট বক্তব‌্যে যখন বলেছি তখন এটা হবে।

 

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ