অর্থনীতি

শেয়ারবাজার গতিশীল করবে ওয়ালটন

দেশের শীর্ষ ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এতে সূচক, লেনদেন এবং বাজার মূলধনে একটি মাইলফলক সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা শেয়ারবাজারকে গতিশীল করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। একইসঙ্গে এই ঘোষণায় বিনিয়োগকারীরা নতুন করে আশার আলো দেখছেন।

বেশ কিছুদিন হলো দেশের শেয়ারবাজারে সূচক ও লেনদেন ধীর গতিতে চলছে। এ সংকট থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দেশের ব্যাংকগুলোকে বাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। যার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এরই মধ্যে ওয়ালটনের এমন ঘোষণায় শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

শেয়ারবাজারের স্বার্থে গত জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর চেয়ারম্যানসহ সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠকে বাজার দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীল রাখতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি, বহুজাতিক এবং সরকারি মালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানিগুলো বাজারে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। 

এই বৈঠকের আগেই দেশের উন্নয়নে অংশীদার হতে শেয়ারবাজারে আসার সিদ্ধান্ত নেয় ওয়ালটন। এটি দেশের অন্যতম ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন স্বনামখ্যাত একটি কোম্পানি। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা আশা প্রকাশ করছেন, ওয়ালটন বাজারে আসার পর সূচকে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এছাড়া ওয়ালটন বাজারে এলে দেশের নতুন বিনিয়োগকারীরাও উৎসাহিত হবে। ওয়ালটন তাদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। এভাবেই দেশের শেয়ারবাজার গতিশীল রাখতে ওয়ালটন বড় ধরনের ভূমিকা পালন করবে।    

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ও শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারের চাহিদা বাজারে সব সময় আছে। এ জন্য বাজার স্থিতিশীল করতে হলে আইপিওর মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানি, সরকারি লাভজনক কোম্পানি বাজারে আনার ব্যবস্থা করা উচিত।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে দীর্ঘ দিন ধরে আইপিওর মাধ্যমে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি আসছে না। যেসব শেয়ার বাজারে আসছে সেগুলোর অধিকাংশই লেনদেন শুরুর পর ফেসভ্যালুর নিচে লেনদেন হয়। এতে বাজারে আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তাই আইপিওর মাধ্যমে বাজারে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি আনার দাবি উঠেছে। ঠিক এমন মুহূর্তে দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড শেয়ারবাজারে আসছে।

শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ ও ঢাবি অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, দেশের বাজারে ওয়ালটন একটি জনপ্রিয় কোম্পানি। অনেক দিন পরে বাজারে এমন একটি বড় কোম্পানি আসছে। যারা কোম্পানি বিডিংয়ে অংশ নিয়েছে তারা জেনেশুনেই দর নির্ধারণ করেছে, এটাকে বিতর্কিত না করে বাজারে আসতে দেয়া উচিত। এ ধরনের কোম্পানি বাজারে এলে সূচক ও লেনদেনে ইতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ওয়ালটনের কোম্পানি সেক্রেটারি পার্থ প্রতিম দাশ বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই দেশের পুঁজিবাজার খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। পুঁজিবাজার চাঙ্গা করতে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। এ অবস্থায় সাধারণ জনগণকে ওয়ালটনের উন্নয়ন অংশীদার করতে এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে পুঁজিবাজারে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন।

 

ঢাকা/মাসুম/তারা