সামাজিক দূরত্ব মানছে না। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে। অন্যকেও করোনার ঝুঁকিতে ফেলছে। ভ্যাপসা গরমেও বিভিন্ন বিপণিবিতানে গাদাগাদি আর সংকুচিত জায়গায় ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার (১৫ মে) দুপুরে ঢাকার বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে রাজধানী সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি দোকান আর মার্কেটের ভেতর গলিতে মাল রাখার কারণে হাঁটার সুযোগ নেই। শত শত মানুষ ঠাসাঠাসি করে একজন আরেকজনের সাথে মিশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেনার চেয়ে দেখার মানুষই বেশি। প্রচণ্ড গরমেও মানুষের ভিড়। তবুও চলছে কেনাবেচা।
ঈদের বাকি মাত্র কয়েকদিন। সাধারণ ছুটির মধ্যে মার্কেট খোলার পর আজ প্রথম শুক্রবার। বিক্রেতারা জানান, আজ মার্কেটে ক্রেতাদের চাপ একটু বেশিই। দোকানীদের টার্গেট ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা। অনেকেই তো ক্রেতাদের ডাকছেন। ক্রেতারাও দেখছেন । ফাঁকে ফাঁকে আবার কিনছেনও। করোনাভাইরাস নিয়ে কথা বলতে চাইলে মুখ ফিরিয়ে নেন অনেকেই।
মার্কেটের গেটে দায়িত্বপালনরত নিরাপত্তাকর্মী মিজান বলেন, মার্কেটে প্রবেশের আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, জীবাণুনাশক স্প্রে করা আর তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখারও অনুরোধও করা হচ্ছে। কিন্তু গরম আর মানুষের ভিড়ে সব উল্টাপাল্টা হয়ে যাচ্ছে। কোনোকিছুই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমরা বলতে পারি, জোর করতে পারিনা। তবুও বলছি কেউ শুনছে না। মানুষ সচেতন না হলে কিছু করার নেই।
এলিন ফ্যাশনের প্রোপ্রাইটর ডি এম শাহিনের কাছে সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমরা দুজন দোকানে আছি। তিন ফিট দূরত্ব বজায় রাখছি। ক্রেতাদেরও বলি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে। কেউ মানেন আবার কেউ মানেন না। অনেক সময় পরিবারের অনেক সদস্য একসাথে দোকানে আসেন। তখন তো আমাদের কিছু বলার থাকে না।
আয়েশা আক্তার নামে একজন ক্রেতা জুরাইন থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন। বড় ছেলে মায়ের হাত ধরে হাঁটছে আর ছোট ছেলে কোলে। নিজে ও বড় ছেলে মাস্ক পড়া। ছোট ছেলের তেমন কোনো সুরক্ষার ব্যবস্থাই করেননি তিনি।
জানতে চাইলে আয়েশা আক্তার বলেন, এখনই মাস্ক কিনে দিচ্ছি। কেনাকাটার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, প্রতিবেশীরা কেনাকাটা করেছে। তাই দেখে বড় ছেলে কান্নাকাটি করছে। এজন্য কেনাকাটা করতে এসেছি।
একটু ভিন্ন চিত্র দেখা যায় শো-রুমগুলোতে। সেখানে কেনাকাটা করতে একসাথে দুজনের বেশি ক্রেতাকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ক্রেতারা ভিতরে ঢুকতে না পেরে বাইরে জটলা বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকেন। রাজধানী সুপার মার্কেটের পাশে অবস্থিত বেবি ক্যাম্পাসে এমনই চিত্র দেখা যায়।
শো-রুমের ম্যানেজার মো. ইব্রাহিম জানান, দোকানে ঢোকার আগে স্যানিটাইজার ও স্প্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে একসাথে দুজনের বেশি ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। মামুন/সাইফ