মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে রাজধানীর অধিকাংশ শপিং সেন্টার বা দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতেই এই ব্যবস্থা নিয়েছে বিভিন্ন মার্কেট কর্তৃপক্ষ। তবে কিছু কিছু দোকান বা পোশাকের শো-রুম খোলা থাকলেও তাতে আশানুরূপ ক্রেতার দেখা মিলছে না।
করোনার প্রভাবে ও গণপরিবহন বন্ধ থাকার ফলে ক্রেতারা বাইরে বের হচ্ছেন না। অনেকেই কেনাকাটা করছেন অনলাইনে। কিন্তু তারপরেও খোলা মার্কেটগুলো ক্রেতাদের নিরাপত্তার স্বার্থে সবর্োচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, সরকার শর্তসাপেক্ষে দোকান বা মার্কেট খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে। তাই আমরা ব্যবসায়ীরা সরকারের দেওয়া সব শর্ত মেনেই দোকান খুলেছি।
রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেট ও এ্যালিফেন্ট রোড সংলগ্ন বিভিন্ন ব্রান্ডের পোশাকের শোরুম ও ধানমন্ডি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
আজিজ সুপার মার্কেটে গিয়ে শুরুতেই চোখে পড়ে জীবাণুনাশক কক্ষ। ক্রেতাদের ও মার্কেট ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার জন্য মার্কেট কর্তৃপক্ষ এই ব্যবস্থা নিয়েছে। কথা হয় মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির সভাপতি নাজমুল আহসানের সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, করোনার সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে সামনে ঈদ। তাই ঈদের সময় মার্কেট খোলা রাখার জন্য আমাদের ব্যবসায়ীরা সবাই বলেছেন। ব্যবসায়ীরা সরকারের দেওয়া শর্ত মেনেই দোকান খোলা রাখছেন। তাদের সবার উদ্যোগেই এই জীবাণুনাশক কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মার্কেটে কোনো ক্রেতা প্রবেশ করার আগে তাদের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। প্রতিটি শো-রুমের সামনে একজন করে কর্মী বসে থাকেন। যেন কোনো ক্রেতা ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে স্যানিটাইজার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে পারে।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রুখতে আজিজ সুপার মার্কেট কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। ঢোকার মুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) পরিহিত নিরাপত্তাকর্মীরা সবাইকে হাত ধুয়ে নিতে বাধ্য করছেন। এরপর জীবাণুনাশক চেম্বারের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। ক্রেতাদের প্রত্যেকের মুখে মাস্ক থাকা বাধ্যতামূলক। বিক্রেতারাও মাস্ক পরছেন। ভিড় হলে মানুষ যাতে শৃঙ্খলা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে আজিজ মার্কেটের ভেতরে ও বাইরে বৃত্ত এঁকে দেওয়া হয়েছে।
কথা হয় আজিজ সুপার মার্কেটের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, করোনার কারণে প্রায় একমাস পর আজ বের হয়েছি। বসুন্ধরা সিটি শপিং মল বন্ধ থাকায় এখানে এসেছি কেনাকাটা করতে।
এতো ঝুঁকি নিয়ে কেন মার্কেটে এসেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঈদের সময়ে কেনাকাটা অনলাইনে করাটা খুব মুশকিল। কারণ অনলাইনে ভালো করে দেখে কেনা যায় না।
রাজধানীর এ্যালিফেন্ট রোড এলাকার প্লাস পয়েন্ট, ইজি, ডিমান্ড, জেন্টেল পার্ক, ব্যাং, রিচম্যানসহ আরও বেশ কিছু পোশাকের শো-রুম ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের আনাগোনা রয়েছে। তবে করোনা ঝুঁকি এড়াতে সব ধরনের নিয়ম মানছেন এসবব্-েরুমের কর্মীরা।
ঢাকা/হাসিবুল/জেডআর