অর্থনীতি

করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো প্রস্তাব

জুনের পেশ হতে যাচ্ছে আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট। এবারের বাজেটে করোনার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি অনেকটা প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেজন্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ী ও শিল্প মালিকদের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চেম্বার ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআিই)। চলতি অর্থবছর করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা রয়েছে।

আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য দেশের ৬টি চেম্বার ও ২৫টি অ্যাসোসিয়েশন আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) এসব প্রস্তাব চলতি মাসে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে উপস্থাপন করেছে।

বাজেট প্রস্তাবে করমুক্ত আয়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে করমুক্ত আয়সীমা সাধারণত মাথাপিঁছু আয়ের সমান বা এর কম হয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে করমুক্ত আয়ের সীমা প্রায় দ্বিগুণের মতো।

এ জন্য সংগঠনটি এ করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করেছে। ব্যক্তিগত করমুক্ত আয় সীমা ও বিদ্যমান আয়করের হার পুনঃনির্ধারণ মূল্যস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় আগামী ২০২০-২১ কর বৎসরের জন্য বর্তমান ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা ও বিদ্যমান আয়করের হার পুনঃনির্ধারণের এ প্রস্তাব করা হয়েছে। 

চলতি অর্থ বছরের বাজেটে নারী করদাতা এবং ৬৫ বৎসর বা বেশি বয়সের সংশ্লিষ্ট সব করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা রয়েছে, তা আগামী অর্থবছরে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, প্রতিবন্ধী করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তিগত করের হার ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত শূন্য হার রয়েছে, পরবর্তী ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর ২০ শতাংশ, পরবর্তী ৩০ লাখ টাকা আয়ের ওপর ২৫ শতাংশ এবং অবশিষ্ট আয়ের ওপর ৩০ শতাংশ হারে ব্যক্তিগত কর হার আরোপ রয়েছে।

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তিগত করের হার প্রথম ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর  আয়কর মুক্ত রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। পরবর্তী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর ৫ শতাংশ, পরবর্তী ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ, পরবর্তী ২০ লাখ পর্যন্ত ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ এবং পরবর্তী আয়ের ওপর ২৫ শতাংশ হারে কর আরোপের সুপারিশ করেছে।

বাজেট প্রস্তাবে আগাম কর (এটি) সংক্রান্ত সুপারিশে বলা হয়েছে, চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে আমদানি শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি, অত্যাবশ্যকীয় ও জীবনরক্ষাকারী পণ্য ছাড়া বাকি সব পণ্যে ৫ শতাংশ হারে আগাম কর আরোপ করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী  প্রতি মাসের নির্ধারিত তারিখে ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়ার সঙ্গে আগাম কর ফেরত দেওয়ার কথা। মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ এবং ২০১৬ সালের মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালার আওতায় আদায়করা ওই কর ফেরত পাওয়া নিয়ে শুরু থেকেই জটিলতায় পড়তে হয়েছে আমদানিকারকসহ সংশ্লিষ্টদের। বাজেট প্রস্তাবে এ আগাম কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে। হাসনাত/এসএম